বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতি ইতালির সমর্থন পুনর্ব্যক্ত

ইতালির পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক ভাইস মিনিস্টার মারিয়া ত্রিপোদি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কার কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টায় ইতালি সরকারের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মারিয়া ত্রিপোদি। এ সময় তিনি পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন এবং চলমান কর্মসূচিতে সমর্থনের ঘোষণা দেন।
ইতালির ভাইস মিনিস্টার প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘আমরা আশা করি সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে আপনি সফল হবেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালীন সময়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আপনি সবসময় আমাদের ওপর নির্ভর করতে পারেন।’
মারিয়া ত্রিপোদি আরও বলেন, ‘ইতালি ও বাংলাদেশ একে অপরের খুব ঘনিষ্ঠ। অনেক বাংলাদেশি নাগরিক ইতালিতে বসবাস করেন এবং তারা আমাদের দেশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।’
তিনি অবৈধ অভিবাসন রোধে বাংলাদেশকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা আইনসম্মত অভিবাসন সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বাংলাদেশ মানবপাচার রোধে কঠোর পরিশ্রম করছে এবং দক্ষ কর্মীদের বৈধ চ্যানেলে বিদেশে পাঠানোর প্রচেষ্টা জোরদার করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা ইতালির ভাইস মিনিস্টারের এই সফরের প্রশংসা করে বলেন, ছাত্র নেতৃত্বাধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশে বহু বছর ধরে চলা দুর্ব্যবস্থার অবসান ঘটেছে। আর এমন এক সময় আপনি বাংলাদেশ সফর করছেন যখন অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনার এই সফর একটি ঐতিহাসিক সময়ে হচ্ছে। জুলাই ঘটনার পর এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়।’
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘আমরা নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি। অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
এর জবাবে ইতালির ভাইস-মিনিস্টার বলেন, বাংলাদেশ ইতালি সরকারের ‘পূর্ণ সমর্থন’পাবে।
মারিয়া ত্রিপোদি আরও বলেন, ইতালি বাংলাদেশের জনগণ ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ করবে না। তিনি উল্লেখ করেন, অনেক ইতালীয় কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, বিশেষ করে টেক্সটাইল, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ইতালির কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর করার আহ্বান জানান এবং দুই দেশের তরুণদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে বিভিন্ন কর্মসূচি বিনিময়ের পরামর্শ দেন।
আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রথম বাংলাদেশ সফর।
সাক্ষাৎকালে এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।