বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা আবেদন দ্রুত প্রক্রিয়াকরণের প্রতিশ্রুতি ইতালির

ইতালির সফররত পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক উপমন্ত্রী মারিয়া ত্রিপোদি আশ্বাস দিয়েছেন, ইতালিতে বাংলাদেশি কর্মীদের দীর্ঘমেয়াদী ভিসা আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে, যা দুই দেশের মধ্যে বৈধ অভিবাসন জোরদার করার প্রতি রোমের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
গতকাল বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠককালে এ আশ্বাস দেন ইতালির এই উপমন্ত্রী।
এ সময় তারা বৈধ অভিবাসনের পথ সম্প্রসারণ এবং অনিয়মিত অভিবাসন, মানব পাচার ও অভিবাসীদের সমস্যা ও সংকট মোকাবিলায় যৌথ প্রচেষ্টা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বৈঠকে উভয় পক্ষই দু’দেশের অর্থনীতিতে ইতালিতে বাংলাদেশি প্রবাসীদের অবদানের প্রশংসা করে।
১৯৭২ সাল থেকে দু’দেশের মধ্যে উষ্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে উপমন্ত্রী ত্রিপোদি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ইতালি সরকারের দৃঢ় সমর্থনের কথা অবহিত করেন এবং শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে এর চলমান সংস্কার উদ্যোগের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন, বিশেষত টেক্সটাইল ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণের আগ্রহ প্রকাশ করেন উপমন্ত্রী ত্রিপোদি।
এ সময় বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যকার বিদ্যমান গতিশীল অর্থনৈতিক সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বিশেষ করে কৃষি খাতে ইতালির অধিকতর বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি আরও জানান, বর্তমান সরকার, বিশেষত বিডা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রক্রিয়া সহজ করে বাংলাদেশে একটি উন্নত ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরিতে নিরলসভাবে কাজ করছে।
বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা উপকরণের উৎসের বৈচিত্র্য আনতে চায় উল্লেখ করে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণে অবদান রাখতে ইতালির আগ্রহকে স্বাগত জানান।
উপমন্ত্রী ত্রিপোদি কক্সবাজারে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের উদার আতিথেয়তার প্রশংসা করেন এবং ইতালির অব্যাহত মানবিক ও রাজনৈতিক সহায়তা পুনর্ব্যক্ত করেন।
মিয়ানমারের ভেতরে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশ জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে বলে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে টেকসই প্রত্যাবর্তনই এই সমস্যার একমাত্র সমাধান।
ইতালির উপমন্ত্রী দুই দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে আসেন। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এটি কোনো ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য কোনো দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রথম সফর।