নিরপেক্ষতা বজায় রেখে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যান, অন্তর্বর্তী সরকারকে মির্জা ফখরুল

নিরপেক্ষতা বজায় রেখে যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার যতটুকু প্রয়োজন সেটুকু শেষ করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে পিলখানায় শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আশা করব সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার যতটুকু প্রয়োজন সেটুকু শেষ করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যান। সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের স্থিতিশীলতা, শান্তি ও ভবিষ্যতের জন্য সমৃদ্ধি আনবেন এটাই প্রত্যাশা।’
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আপনি শক্ত হাতে আপনার সরকারকে পরিচালনা করুন। কেউ যেন আপনাকে বলতে না পারে যে আপনি পক্ষপাতিত্ব করছেন। সেটা শুনতে চাই না কারণ আপনি একজন বিখ্যাত মানুষ। সারা বিশ্বে আপনার নাম রয়েছে সেটার মর্যাদা রাখবেন এটাই আশা করছি।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘বিডিআর এমন একটি সংগঠন ছিল যারা অত্যন্ত যোগ্যতা ও সাহসিকতার সঙ্গে নিজেদের দায়িত্ব পালন করত। বাংলাদেশের সীমান্তকে যেন রক্ষা করা যায় সেই কাজটিই তারা করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পরই অত্যন্ত পরিকল্পনার সঙ্গে বিদ্রোহ ঘটিয়েছে। সেদিন ৫৭ জন দেশপ্রেমিক চৌকস সেনাবাহিনীকে তারা হত্যা করেছে।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এক-দুদিনে তাদের প্রতি মানুষের বিদ্বেষ তৈরি হয়নি। সেই ৭২ সাল থেকে আওয়ামী লীগের প্রতি, শেখ মুজিবের প্রতি ঘৃণার জন্ম হয়েছে। কারণ তারা কোনোদিনই বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসেনি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের শক্তি। সব সময় আমরা দেখেছি জাতির ক্রান্তি লগ্নে তারা এগিয়ে আসে। আমরা দেখেছি ৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যখন হামলা করেছে, আক্রমণ করেছে, হত্যা করেছে তখন আমাদের মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে গোটা জাতিকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন। সেদিন জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছে। আবার আমরা দেখেছি ২৪-এ গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রকৃত পক্ষে দেশপ্রেমিকের ভূমিকা পালন করেছে।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আসুন আমরা শপথ নেই, যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করব। যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা রক্ষা করব। আমরা যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনব। আমরা সংগ্রাম করেছি, লড়াই করেছি, আরও লড়াই করব।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম ও মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত প্রমুখ বক্তব্য দেন।