মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলায় বাংলাদেশের সমর্থন চায় গাম্বিয়া

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা সম্পর্কে জানিয়েছেন গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু তাঙ্গারা। তিনি বলেন, মিয়ানমারে নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে তার দেশ কাজ করছে।
আজ বুধবার (১২ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু তাঙ্গারা এ কথা বলেন।
মামাদু তাঙ্গারা বলেন, ‘আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি যে গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট এই বিষয়টিকে সমর্থন করছেন ও বিষয়টি দেখছেন। আমরা এই বিষয়টিকে আবার সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে চাই। গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ও গাম্বিয়ার জনগণ এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আরও পড়ুন : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের আহ্বান
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পক্ষে কাজ করার জন্য ও এই মামলার সফল হওয়ার জন্য আফ্রিকান দেশটির অবিরাম প্রতিশ্রুতি ও অব্যাহত প্রচেষ্টার জন্য গাম্বিয়াকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চাই এই মামলা সফল হোক। আমরা আপনাদের সমর্থন চাই। এটি আমাদের জন্য একটি বড় সহায়ক।’
মামাদু টাঙ্গারা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনে সহায়তা করবে। গাম্বিয়ার জনগণের কাছে আপনি পরিচিত নাম। আপনার আভা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সবসময় আপনাদের পাশে থাকবে।’
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে নতুন দায়িত্বে ড. ইউনূসের সাফল্য কামনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনার মহৎ কাজ ও চ্যালেঞ্জিং যাত্রার সাফল্য কামনা করি।’
আরও পড়ুন : রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে ইউএনএইচসিআর
অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য ত্রাণ সংগ্রহে ঢাকার প্রচেষ্টা ও বাস্তুচ্যুত লোকদের খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তাসহ রাখাইনে মানবিক সাহায্য ও সহায়তা এবং সীমান্ত পেরিয়ে আরও বেশি লোকের বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া বন্ধ করার বিষয়ে তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টা দুই দেশের মধ্যে গভীর বাণিজ্য ও সহযোগিতার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আপনাদের কীভাবে আমরা সাহায্য করতে পারি—তা আমাদের জানান।’
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যৌথভাবে কাজ করার জন্য একটি চুক্তি সইয়ের বিষয়েও দুই নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা আফ্রিকার লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে ও ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে মহাদেশটির সহিংসতাপীড়িত কয়েকটি অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন : রোহিঙ্গা সংকটের আন্তর্জাতিক সমাধান চান ড. ইউনূস
বৈঠকে রোহিঙ্গাবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান ও বাংলাদেশ সরকারের জ্যেষ্ঠ সচিব ও এসডিজিবিষয়ক প্রধান লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।