৬ মাসেও দৃশ্যমান হয়নি অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সংস্কার : আমিনুল হক

ছয় মাসেও অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সংস্কার দৃশ্যমান হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহ্বায়ক আমিনুল হক।
আজ রোববার (১৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর দক্ষিণখান থানার সামনে বালুর মাঠে দক্ষিণখান থানা বিএনপির কর্মী সভা ও রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফার কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন আমিনুল হক।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপিনেতা আমিনুল হক বলেন, ‘আপনারা গত ছয় মাসেও বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে সংষ্কারের কথা বলছেন। এখনও পর্যন্ত কোনো সংস্কার জাতির সামনে দৃশ্যমান নেই। কারণ এখনও বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসররা বহাল তবিয়তে বসে আছে। সেই স্বৈরাচারদেরকে রেখে আপনারা কীভাবে সংস্কারের কথা বলেন? আগে স্বৈরাচারের নির্মূল করেন, অপসারণ করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে সংস্কার করেন। এমনিতেই বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়ে যাবে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আপনারা যারা সংস্কারের নামে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আপনাদের মাথায় কি ঘুরছে আমরা জানি না! বুঝতেছি না! কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ আপনাদেরকে বুঝতে বেশি দিন সময় দেবে না। কারণ আপনারা যদি ক্ষমতার মোহে সংস্কারের নামে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করেন। বাংলাদেশের জনগণ এটা কখনই মেনে নেবে না।’
বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা এই বছরের ভেতরেই একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় উল্লেখ করে আমিনুল হক অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘সেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নেন। বাংলাদেশের জনগণের যে প্রত্যাশা, সেই প্রত্যাশাকে সামনে রেখে আপনারা দ্রুত সময়ের ভেতরে একটা নির্বাচন দেন এবং সেই নির্বাচিত সরকার বাংলাদেশের সব অবকাঠামো রাষ্ট্রীয় কাঠামো মেরামতের মাধ্যমে পরিপূর্ণ সংস্কার করবে।’
এ সময় বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তার অবৈধ মন্ত্রী-এমপি, যারা বিদেশে পালিয়ে গেছে এবং দেশের ভেতরে যারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। কারণ বাংলাদেশে কোনো স্বৈরাচারের স্থান হতে পারে না। বাংলাদেশকে আমরা পরিপূর্ণভাবে স্বৈরাচার মুক্ত করব।’
বিএনপিনেতা আমিনুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশে পরিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে দ্রুত একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন। সেই সুষ্ঠু নির্বাচনে এদেশের মানুষ নিরপেক্ষভাবে, স্বচ্ছভাবে, সুন্দরভাবে তার ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। জনগণের সরকারই একমাত্র পারবে দেশে পরিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে, দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করতে এবং এদেশের জনগণের দাবি আদায় করতে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফার রূপরেখার মাধ্যমেই একটি আগামীর সুন্দর সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আমিনুল হক।
দক্ষিণখান থানা বিএনপির আহ্বায়ক হেলাল তালুকদারের সভাপতিত্বে থানা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আমিরুল ইসলাম বাবলুর সঞ্চালনায় কর্মশালায় বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি সদস্যসচিব মো. মোস্তফা জামান, মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এ বি এম এ রাজ্জাক, গাজী রেজওয়ান উল হোসেন রিয়াজ, হাজী মো. ইউসুফ, আফাজ উদ্দিন, মাহাবুব আলম মন্টু, মহানগর সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার শিশিরসহ অন্যান্যরা।
অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে আমিনুল হক উত্তরা ও খিলক্ষেত এলাকার পাঁচ স্পটে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করে করেছেন।