হিলি দিয়ে ১ মেট্রিক টন মহিষের মাংস আমদানি
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো ভারত থেকে হিমায়িত মহিষের মাংস আমদানি করা হয়েছে। প্রতি কেজি মাংস আমদানি করতে সবমিলে খরচ হয়েছে ৩০০ টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার (৯ মে) বিকেলে এক মেট্রিক টন মাংস নিয়ে ভারতীয় একটি ফ্রিজিং ট্রাক দেশে আসে। আজ বুধবার (১০ মে) বিকেলের মধ্যে মাংসবাহী ফ্রিজিং ট্রাকটি কাস্টমস কার্যালয় থেকে খালাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরের কাস্টমস কার্যালয় সূত্র জানায়, ঢাকার তেজগাঁওয়ের মেসার্স মিডলাইফ প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড নামে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের কলকাতার বেলঘরিয়া এলাকার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিডলাইফ প্যাকেজিং কোম্পানির থেকে এক মেট্রিক টন হিমায়িত মহিষের মাংস আমদানি করেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি পোর্টের অভ্যন্তরে মাংসবাহী ট্রাকটি প্রবেশ করে। খবর পেয়ে কাস্টমস কর্মকর্তারা মাংসের চালানের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সঠিকতা যাচাই করেন। বর্তমানে মাংসবাহী ট্রাকটি খালাস করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের উপকমিশনার মো. বায়জিদ হোসেন বলেন, ‘ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে এই প্রথম হিমায়িত মহিষের মাংস আমদানি করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার পর হিমায়িত মাংস খালাসের অনুমতি দেওয়া হবে।’
হাকিমপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আজকের (বুধবার) মধ্যে আমদানিকৃত মহিষের মাংসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে। সেখান থেকে ভালো ফলাফল এলে বাজারজাত করার অনুমতি দেওয়া হবে। তবে তার আগ পর্যন্ত আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে তার নিজ হেফাজতে মাংস ফ্রিজিং করে রাখতে বলা হয়েছে।’
মাংস খালাস কার্যক্রমে নিয়োজিত বন্দরের স্থানীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স যমুনা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী অনিক সরকার বলেন, ‘ভারতের কলকাতার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিহার রাজ্য থেকে ঢাকার আমদানিকারক মেসার্স মিডলাইফ প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড এই মহিষের মাংস আমদানি করেছে। এক মেট্রিক টন আমদানি করতে ১৮০০ ডলার পড়েছে। গত রোববার এক মেট্রিক টন মাংস নিয়ে ভারতীয় একটি কাভার্ড ট্রাক বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়। মঙ্গলবার বিকেলের পর ট্রাকটি হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করে। মাংস খালাসের জন্য আমরা কাস্টমস কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেছি। আশা করি আজ বুধবারের মধ্যে খালাস করা সম্ভব হবে।’
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিডলাইফ প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের সূত্র জানায়, দেশে গরু, মহিষ ও ছাগলের মাংসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, কিন্তু দাম বেশি। চাহিদা থাকলেও দামের কারণে অনেকে মাংস কিনছেন না। তাই প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে হিমায়িত মহিষের মাংস আমদানি করা হচ্ছে। এতে ভোক্তারা কম দামে মাংস কিনতে পারবেন।
ওই সূত্র আরও জানায়, ভারত থেকে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি কেজি মহিষের মাংস ৩০০ টাকার কমে পড়েছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় এ মাংস বিক্রি করা হবে। এতে ভোক্তারা কম দামে মাংস কিনতে পারবেন।
এদিকে বন্দরের বাংলাহিলি কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, “১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে হিমায়িত মহিষের মাংস আমদানি করা হয়েছে। এর আগে অন্যান্য পণ্য আমদানি হলেও কোনো ধরনের মাংস এই বন্দর দিয়ে আমদানি করা হয়নি। এটা ভালো দিক। ফলমূলসহ অন্যান্য পণ্য আমদানিতে সুযোগ সৃষ্টি করা হলে যেমন বন্দরে গতিশীলতা আসবে, তেমনি সরকার বেশি রাজস্ব আয় করতে পারবে।”