প্রবাসী আয় আগস্টে বাড়ল ৩৯ শতাংশ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে প্রবাসীদের মধ্যে 'নো রেমিট্যান্স' প্রচারণা ছড়িয়ে পড়ে। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় পাঠাবেন না বলে এক জোট হন তারা। এতে গত জুলাইয়ে প্রবাসী আয়ে মন্দা দেখা দেয়।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে প্রবাসী আয়ের পালে লাগে হাওয়া। সেই হাওয়ায় গত আগস্টে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৬ হাজার ৫৮২ কোটি ৫৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা (প্রতি ডলার ১১৯ টাকা ৬৭ পয়সা হিসাবে)। গত বছর (২০২৩) একই সময় (আগস্ট) প্রবাসী আয় এসেছিল ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। সে হিসাবে, প্রবাসী আয় বেড়েছে ৬২ কোটি ১৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার বা ৩৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। চলতি বছরের আগস্টের প্রথম ১০ দিনে (১ থেকে ১০ আগস্ট) প্রবাসী আয় এসেছিল ৪৮ কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার। পরের সাত দিনে (১১ থেকে ১৭ আগস্ট) প্রবাসী আয় এসেছিল ৬৫ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এরপরের সাত দিনে (১৯ থেকে ২৪ আগস্ট) প্রবাসী আয় এসেছিল ৫৮ কোটি ৪১ লাখ ১০ হাজার ডলার। মাসটিতে শেষ সাত দিনে (২৫ থেকে ৩১ আগস্ট) প্রবাসী আয় এসেছে ৫০ কোটি ২৯ লাখ ৯০ হাজার ডলার। আগের মাস জুলাইয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের আগস্ট মাসে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ১৭৫ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৮ কোটি ৩৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে সাত কোটি ৮১ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪৭ লাখ ১০ হাজার ডলার।
দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর মধ্যে আগস্টে একক ব্যাংক হিসেবে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসী আয় ৪০ কোটি ৫২ লাখ ৩০ হাজার ডলার এসেছে। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৯ কোটি তিন লাখ ১০ হাজার ডলার। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে ২০ কোটি ৬৬ লাখ ২০ হাজার ডলার, জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে ১৫ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ৬২ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ছয় লাখ ৫০ হাজার ডলার এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৭০ হাজার ডলার, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার ডলার, মে মাসে ২২৫ কোটি ৪৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার, জুনে ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলার এবং জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার এসেছে।
আগের বছর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার ডলার, নভেম্বরে ১৯৩ কোটি ৪০ হাজার ডলার, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ ৩০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।