তিন দাবি পূরণ হলে ক্লাসে ফিরবে বুয়েট শিক্ষার্থীরা

বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযোগপত্র দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, এবার তিনটি দাবি পূরণ হলেই ক্লাস ও পরীক্ষায় ফিরবে তারা।
গতকাল বুধবার ২৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে ডিবি পুলিশ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার নিজেদের ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এতে গত ২ নভেম্বর এক বৈঠকে বুয়েট প্রশাসনকে দেওয়া শিক্ষার্থীদের তিনটি দাবি বাস্তবায়ন হলে ক্লাসে ফেরার কথা ব্যক্ত করে শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা, আহসান উল্লাহ, তিতুমীর ও সোহরাওয়ার্দী হলের র্যাগের ঘটনায় অভিযুক্তদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া এবং সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি ও র্যাগের জন্য সুস্পষ্টভাবে বিভিন্ন ধাপে ভাগ করে শাস্তির নীতিমালা করে বুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট থেকে অনুমোদন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্সে অন্তর্ভুক্ত করা।
সংবাদ সম্মেলনে বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অনিরুদ্ধ গাঙ্গুলি জানান, বুয়েটের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার বিষয়ে গত ২ নভেম্বর বুয়েটের ভিসি, ডিএসউব্লিউ ও ডিনদের সঙ্গে আলোচনা করে তিনটি দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা। এর মধ্যে দুটি দাবি বাস্তবায়ন হলে পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণে সম্মত এবং তৃতীয় দাবি বাস্তবায়ন করা হলে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষায় বসার শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। তিনি বলেন, ‘গত ২ নভেম্বরের আলোচনায় বুয়েট প্রশাসন পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে দুটি দাবি বাস্তবায়ন করার আশ্বাস দেয়। কিন্তু দুই সপ্তাহের মধ্যেও দাবিগুলো বাস্তবায়নে প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ না দেখায় হতাশা ব্যক্ত করে শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের গাফিলতি রয়েছে বলেও দাবি করে শিক্ষার্থীরা।’
আবরারের বাবা বরকত উল্লাহর করা মামলার এজাহারভুক্ত ১৯ জন আসামির বাইরে তদন্ত করে আরো ছয়জনকে অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে শিক্ষার্থীরা।
গত ৬ অক্টোবর আবরার ফাহাদ হত্যার পরের দিন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। ওই ঘটনায় গতকাল বুধবার ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে ডিবি। তদন্তে নেমে পুলিশ এজাহারের ১৬ জনসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে আবরার হত্যায় ১১ জন সরাসরি যুক্ত ছিল বলে জানায় ডিবি। তারাই আবরারকে কয়েক দফায় মারধর করে। বাকি ১৪ জন বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্নভাবে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল।