জবি শিক্ষার্থী ফাইরুজের আত্মহত্যাকে খুন দাবি করে ঢাবিতে বিক্ষোভ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকাকে আত্মহত্যায় বাধ্য করে খুন করা হয়েছে দাবি করে এ আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি।
আজ শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এই ঘটনাকে টেকনিক্যাল মার্ডার আখ্যা দিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সদস্য এবং ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত রাশিদ বলেন, ফাইরুজ আমার বড়বোনের মতো। ওনাকে আমি বহু আগে থেকেই চিনি, দীপ্ত-প্রতিবাদী একজন মানুষ ছিলেন তিনি। তিনি কোনোভাবেই আত্মহত্যা করতে পারেন না। এটা একটা টেকনিক্যাল মার্ডার।
ফাইরুজ সুইসাইড পোস্টে স্পষ্ট করে বলে গিয়েছেন, সহপাঠী আম্মানের কাছে দিনের পর দিন তিনি হ্যারাসমেন্টের শিকার হয়ে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের কাছে ছুটে গিয়েছেন। কিন্তু সেই সহকারী প্রক্টরও হ্যারেজার আম্মানের দলে যোগ দেয়। তিনি কোনো বিচার পাননি, তার সাথে দিনের পর দিন পশুর মতো আচরণ করা হয়েছে। শত শত ফাইরুজকে আজ এভাবে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে।
তিনি আত্মহত্যার মাধ্যমে এসবের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি অত্যাচারিতদের পক্ষে অত্যাচারীর বিচার চেয়ে আত্মত্যাগ করেছেন। আমরা তার এ ত্যাগকে বৃথা যেতে দেব না।
সংগঠনটির আরেক সদস্য ফারজানা আফিফা অদিতি বলেন, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পিকার নারী সে দেশে নারীরাই নিপীড়িত হচ্ছে। ফাইরুজ অবন্তিকা এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, শেষ পর্যন্ত তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আজকে আমাদের একটাই দাবি, এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সংগঠনের যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল হায়দার মাসুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টররা আজ রাঘব বোয়ালে পরিণত হয়েছে। রক্ষক ভক্ষকের ভূমিকা পালন করছে। শিক্ষার্থীরা অত্যাচারিত হয়ে যখন প্রক্টরের কাছে অভিযোগ নিয়ে যায়, বিচার চায়, তখন তারা দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। বহিষ্কার করার হুমকি দেয়, গালাগাল করে। কিংবা তাদেরকে চুপ থাকতে বলা হয়। এর চেয়ে লজ্জার আর কি হতে পারে।
আব্দুল হায়দার মাসুদ আরও বলেন, অবন্তিকা ফাইরুজ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত কুলাঙ্গার দ্বীন এবং আম্মানকে দৃষ্টান্তমূলত শাস্তি দিতে হবে। যেন এমন কাজ করতে আর কেউ দুঃসাহস না করে।
আত্মহত্যার শিকার ফাইরুজ অবন্তিকা নামের ওই ছাত্রী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। গলায় ফাঁস দেওয়ার আগে ফাইরুজ নিজেই এক ফেইসবুক পোস্টের মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম এবং আইন বিভাগের একই ব্যাচের শিক্ষার্থী রায়হান সিদ্দিকী আম্মান (আম্মান সিদ্দিকী) কে আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে যান।