এই ৫ খাবার খেলে গরম হবে মেজাজ, মানসিক স্বাস্থ্যে ফেলবে নেতিবাচক প্রভাব
খাদ্য এবং মানসিক স্বাস্থ্য একে অপরের সাথে জড়িত। স্বাস্থ্যকর খাদ্য আমাদের চেহারা এবং সুস্থতার জন্য অবদান রাখে। তার সাথে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলে। সুষম খাদ্য আমাদের চিন্তাশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
অন্যদিকে, অস্বাস্থ্যকর ডায়েট ক্লান্তি এবং বিষাদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্বিত করে। অনেক সময় এসব ডায়েট স্ট্রেস এবং হতাশার কারণ হতে পারে। কিছু খাবার আছে যা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
প্রক্রিয়াজাত খাবার
প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলো সাধারনত দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষণ করে প্রস্তুত করা হয়। যেমন: মিষ্টি জাতীয় খাবার ও পানীয়, মসলাদার স্ন্যাক্স, হাঁস-মুরগি ও মাছের নাগেট, ইনস্ট্যান্ট নুডলস। এগুলোতে চিনি, লবণ এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি বেশি থাকে। এই খাবারগুলোতে উচ্চমাত্রায় ক্যালরি ও ফ্যাট থাকে। যা রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে মেজাজের পরিবর্তন করে। অতিরিক্ত চিনি খাওয়া বিষণ্নতা এবং উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ব্যস্ততার কারণে আমরা বেশিরভাগ সময়ই ফল এবং শাকসবজির বদলে ইনস্ট্যান্ট নুডলস অথবা ফ্রোজেন ফুডগুলোতে বেশি প্রাধান্য দেই। এতে আমদের মানসিক স্বাস্থ্য নষ্ট হয়।
ক্যাফেইন
পুষ্টিবিদ এবং নিউট্রেসি লাইফস্টাইলের সিইও ডাঃ রোহিনী পাতিল টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানায় যে, “অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণে উদ্বেগ, নার্ভাসনেস এবং বিরক্তি অনুভূতি হতে পারে। এটি ঘুমকেও ব্যাহত করে যার ফলে উদ্বেগ এবং হতাশার অনুভূতিকে আরও বাড়িয়ে তুলে। এর পরিবর্তে, পেপারমিন্ট, ল্যাভেন্ডার বা লেবুর মতো ভেষজ চা পান করুন। এই গরম পানীয়গুলি আপনাকে শান্ত এবং সতেজ রাখবে।
অ্যালকোহল
অত্যাধিক অ্যালকোহল সেবন হতাশা এবং উদ্বেগের কারণ হতে পারে। এর ফলে প্রায়ই ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। খালি পেটে খেলে এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। অ্যালকোহল পান করলে শরীরে ডিহাইড্রেশন হয়। যা উদ্বেগের কারণ হতে পারে। অ্যালকোহল ডিহাইড্রেশন, ঘুমের অভাব, ভিটামিন বি-এর অভাব একত্রিত করে। এর ফলে শরীরে এক ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এতে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যর ক্ষতি হয়।
উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার
স্যাচুরেটেড ফ্যাট, যেমন মাখন, উচ্চ চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবারগুলো ধমনীকে ব্লক করতে পারে এবং মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমাতে পারে। অন্যদিকে, ট্রান্স ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার হতাশা এবং উদ্বেগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এই খাবারগুলোর ক্ষতিকারক চর্বি এবং চিনির সংমিশ্রণ আরও ভয়াবহ। গবেষণা অনুসারে, অতিরিক্ত শর্করা এবং স্যাচুরেটেড চর্বিযুক্ত খাবারগুলো উৎকন্ঠা বাড়ার কারন।
ময়দা দিয়ে প্রস্তুতকৃত খাবার
ময়দা দিয়ে প্রস্তুত করা খাবারগুলো মস্তিষ্কে এক ধরনের প্রদাহ সৃষ্টি করে। এগুলো হতাশা বাড়ায়। এই খাবারগুলো মেজাজ খারাপ করে রাখে। গবেষণার একটি উল্লেখযোগ্য সংস্থা পরামর্শ দেয় যে, যারা উদ্বেগে ভুগছেন তাদেরকে এই ময়দা জাতীয় খাবার গ্রহণ বাদ দেওয়া উচিত। বিশেষ করে সিলিয়াক রোগে আক্রান্ত রোগীদের ময়দা দিয়ে প্রস্তুতকৃত খাবার থেকে দূরে থাকা উচিত।
ডা: পাটিল পরামর্শ দেন, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, এই সব খাবারগুলি নিজে থেকেই মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে না। অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে আমাদের শরীরে রাসায়নিক এবং হরমোনের ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে। এতে আমাদের মানসিক সুস্থতার ব্যাঘাত ঘটে ৷ তাই প্রচুর ফলমূল, শাকসবজি এবং সুষম খাদ্য খাওয়া উচিত। এগুলো আমাদের স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার উন্নতি করতে সাহায্য করে। মানসিক সমস্যাগুলির ঝুঁকি কমাবে।
সূত্র : টাইমস অফ ইন্ডিয়া