জেনে নিন বিচ্ছেদের ইতিবাচক দিক
বিচ্ছেদ কষ্টের। বিচ্ছেদ মানেই দহন। দহন, যন্ত্রণা, বিষণ্ণতায় ছেয়ে যায় মন। কখনো কখনো মন কেবল পোড়েই না, ঝলসেও যায়। তবে বিচ্ছেদ কি কেবলই পোড়ায়, শেখায়ও তো কিছু। জ্ঞানীরা তো বলেন, বিচ্ছেদ মানুষকে আরো নিপুণ, নিখুঁত করে তোলে।
প্রিয় মানুষটি দূরে চলে গেলে হৃদয়ভাঙার কষ্ট তো বয়ে বেড়াতেই হয়, তবে একটু ভিন্নভাবেও ভাবতে পারেন বিষয়টিকে। বিচ্ছেদ কখনো কখনো মানুষকে সৃষ্টিশীল করে তোলে। বিরহ থেকেই কিন্তু তৈরি হয়েছে বেহাগ রাগ। আবার দরবেশ শামস-ই-তাবরিজের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর সুফি সাধক রুমি হয়ে উঠেছিলেন বিশ্বখ্যাত কবি। রচনা করেছিলেন ‘মসনবি’র মতো মহৎ সাহিত্য। বিচ্ছেদের পর মানুষ আরো সৃষ্টিশীল হয়েছে, এ রকম উদাহরণ অজস্র।
আসলে সম্পূর্ণ বিষয়টিই দৃষ্টিভঙ্গির। আমরা আমাদের আবেগকে কীভাবে বয়ে যেতে দেব, সেটিই বোঝার বিষয়। এ আবেগ কি সৃষ্টিশীল হবে না ধ্বংসাত্মক, তা আপনার হাতে। চলুন আজ জানি, বিচ্ছেদের কিছু ইতিবাচক দিক। এগুলো জানিয়েছে জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট ফেমিনা।
ভবিষ্যতের কথা ভাবা
আপনারা দুজন একসঙ্গে থাকার সময় কেবল নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। নিজেদের পছন্দ-অপছন্দ, অর্থনৈতিক বিষয়, স্বাস্থ্য, পরিবারই হয়তো ব্যস্ত রাখত আপনাদের। নিজের যে আলাদা একটা জগৎ রয়েছে, আর সেটাও যে কখনো কখনো আপনার শ্বাস ফেলার জন্য জরুরি—এ কথটা হয়তো ভুলেই গিয়েছিলেন। আলাদা করে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে হয়ত ভাবা হতো না।
বিচ্ছেদের পর আজ কিন্তু সময় এসেছে নিজেকে নিয়ে ভাবার; নিজেকে আরো গুছিয়ে নেওয়ার, ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে তৈরি করার।
চাওয়া
বিচ্ছেদ কিন্তু সুযোগ করে দেয় নতুন সম্পর্ক তৈরির। আপনি আসলে সম্পর্ক থেকে কী চান, সঙ্গীর প্রতি আসলেই আপনার চাওয়াগুলো কী, তা পরিষ্কার হয়ে আসে বিচ্ছেদের মাধ্যমে।
তবে ধীরে, তাড়াহুড়ো নয়। একটি সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরপরই খুব দ্রুত নতুন আরেকটি সম্পর্কে প্রবেশ না করার পরামর্শ দেন মনোবিদরা। তাই ভবিষ্যতে সম্পর্কে তো জড়াবেনই, তবে বুঝেশুনে।
নিজের জন্য সময় পাওয়া
আসলে প্রত্যেক মানুষ নিজের জন্য কিছুটা আলাদা সময় চায়। আর ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কে জড়িয়ে থাকলে, সেটা প্রায় অসম্ভব। বিচ্ছেদ সে বিষয়টি তৈরি করে দেয়। নিজের প্রতি যত্নেরও সুযোগ হয় তখন। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া, ঘুরে বেড়ানো—যা হয়তো এতদিন করতেন না আপনি, বিচ্ছেদের পর সেগুলোর দুয়ার খুলে যায়। আর কারো কাছে কৈফিয়তও দিতে হয় না।
প্রেমই সব নয়
প্রেম বিশ্বময়। তবে কেবল নারী-পুরুষের প্রেমই কি সব? এর বাইরেও একটি জগৎ রয়েছে। প্রেম হতে পারে আপনার পছন্দের কাজের সঙ্গে; বই পড়া, গান শোনা, ঘুরে বেড়ানো, ধ্যান করা—এগুলোর সঙ্গে। কেবল একটি কেন্দ্রে আটকে না থেকে নিজের ভেতরের শক্তি ও প্রেমকে ছড়িয়ে দিন বিশ্বময়।