সতর্ক থাকুন সম্পর্কের ১০টি সমস্যা নিয়ে
সম্পর্কের মাঝে চড়াই-উৎরাই তো থাকবেই। কিন্তু এর মাঝেও কিছু কিছু সমস্যা মাঝেমধ্যে এমন হয়ে ওঠে, যার ফলাফল সুবিধের নয়। এগুলো থেকে বড় রকম সমস্যা, এমনকি বিচ্ছেদও হতে পারে। এই সমস্যাগুলো কী আর এর সমাধানই বা কীভাবে করবেন, তা নিয়ে বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছে থিসটলি ডটকম।
১. যোগাযোগের সমস্যা
সম্পর্কের শুরুতে দুজনেই একে অন্যকে জানতে অনেকটা সময় দেয়, কথা বলে, খুনসুটি করে। তবে সময় পেরোতে পেরোতে একসময় এসব করতে আর মনে থাকে না। একজন আরেকজনকে কম সময় দেয়। এটি একসময় বড় সমস্যা তৈরি করে। তাই সময় থাকতে একে অন্যকে সময় দিন।
২. বিশ্বাস
আপনি কি সত্যিই আপনার সঙ্গীকে বিশ্বাস করেন? বিশ্বাসহীনতা আরেকটি বড় সমস্যা সম্পর্কের ক্ষেত্রে। এর দুটি ধরন আছে। প্রথমত, আপনি কি আপনার সঙ্গীকে অন্য কারো সঙ্গে রাতের খাবারে যেতে দিতে রাজি আছেন? যদি না থাকেন তাহলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আপনি। এটা সম্পর্ককে ভঙ্গুর করতে পারে।
দ্বিতীয়ত, আপনি কি আপনার সঙ্গীর সিদ্ধান্তের ওপর আস্থা রাখেন? আপনি কি ভাবেন আপনার সঙ্গী গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমর্থ? আপনি যদি আপনার সঙ্গীকে শ্রদ্ধা না করেন, এটি দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভালো চিহ্ন নয়। তাই সম্পর্কে শ্রদ্ধা আনতে চেষ্টা করুন। অন্যের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিন। প্রয়োজনে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করুন।
৩. ঈর্ষা এবং নিরাপত্তাহীনতা
যেসব যুগল সব সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে, তাদের মধ্যে ঈর্ষা এবং রাগ চক্রাকারে ঘুরতে থাকে। যদি আপনার সঙ্গীর চাকরির পদোন্নতিতে ঈর্ষান্বিত হন, তাহলে বুঝতে হবে যে আপনি তাঁর সাহায্যকারী নন। এ রকম অনেক অভিভাবকরাই আছেন, তাঁরা শিশুকে বকাবকি করেন কারণ সে আনন্দ করছে।
আপনার শেখা উচিত কীভাবে সম্পর্কে আস্থাভাজন হতে হয়। একজন আরেকজনের সফলতায় খুশি হোন। কেন না তিনি তো আপনারই সঙ্গী।
৪. ভালোবাসায় অসঙ্গতি
সম্পর্কে কখনো একজন আরেকজনের জন্য নিখুঁত হতে পারে না। তাই সব সময় একে অন্যের ত্রুটিগুলো না খুঁজে ছাড় দিন। নয়তো একসাথে বসবাস করা কঠিন হয়ে যাবে।
৫. যৌন সমস্যা
যৌন বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ দাম্পত্য জীবনে। যদি কয়েক মাস বা কয়েক বছরের মধ্যে যৌন চাহিদা হারান তবে এটি সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এ ধরনের সমস্যা উত্তরণের উপায় বের করুন।
৬. টাকা
সারা দিন কি এই ভাবছেন যে, আপনার সঙ্গীর থেকে আপনার বন্ধুর সঙ্গী বেশি টাকা আয় করেন? এমন হলে কিন্তু খুবই সমস্যা, এটি আপনাকে হতাশ করে তুলতে পারে। আবার আপনারা যদি বেশি টাকা আয় করেন বন্ধুর থেকে এবং এটি যদি খুশি করে আপনাকে, বুঝতে হবে গলদ আছে চিন্তায়। অন্যের অবস্থার ওপর নির্ভর করে আপনার সম্পর্কের ভালো-মন্দের কোনো মানে হয় কি? যাই ভাবছেন, বুঝে ভাবুন!
৭. অগ্রাধিকার পরিবর্তন করুন
যদি আপনি একটি সম্পর্কের মধ্যে থাকেন এবং নিজেকে পরিবর্তন না করেন বা নিজেকেই অগ্রাধিকারে রাখেন সব সময়, তবে এটা সমস্যা তৈরি করতে পারে। যদি আপনাদের মধ্যে কোনো মিল নাও থাকে, তবু নিজেদের মধ্যে সময় কাটিয়ে, আলোচনা করে বিষয়গুলো বোঝার চেষ্টা করুন। কেবলমাত্র নিজের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে গুরুত্ব না দিয়ে সঙ্গীর বিষয়েও গুরুত্ব দিন। এটি বিপরীতমুখী দুজনকে একসঙ্গে চলতে সাহায্য করবে।
৮. সময় দিন
আপনাদের কি পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় নেই একজনের আরেকজনকে দেওয়ার? হয়তো আপনি বিলাসবহুল জীবন-যাপনের পেছনে দৌড়ালেন, কিন্তু সঙ্গীর সঙ্গে কিছুক্ষণ কাছাকাছি থাকার সময় নেই। এটিও বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। প্রশ্ন আসতে পারে, ‘তাহলে কি আমার কোনো প্রয়োজন আছে তোমার জীবনে’? এটি দূরত্ব বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই নিজেদের মধ্যে কিছুটা হলেও কোয়ালিটি সময় কাটান।
৯. একটু দূরত্ব রাখুন
সম্পর্কে ‘অতিরিক্ত’ ভালো কখনো কখনো ভালো নয়। যখন আপনি একটি সম্পর্কের মধ্যে আছেন, তখন নিজেদের মধ্যে সময় কাটানো খুব জরুরি। কিন্তু সেটার সীমা ছাড়িয়ে গেলে আপনাদেরই উল্টো সমস্যা তৈরি হতে কতদিন! তাই একটু নিজের মতো করে একা থাকারও প্রয়োজন আছে। যেটা একজন আরেকজনকে অনুভব করতে সাহায্য করবে।
১০. আপনি কি এখনো ভালোবাসেন
এটি একটি বড় সমস্যা সম্পর্কের ক্ষেত্রে। প্রেমে পড়া সহজ। কিন্তু প্রেমে থাকা নয়। ভালোবাসা হলো নির্ভরতা এবং আবেগের বিষয়। সব সময় সেটা একরকম থাকবে তাও নয়। তাই সঙ্গীর কাছে কী চান, সেটি বুঝতে চেষ্টা করুন।