বিয়ের বয়সের উপর নির্ভর করে বিবাহবিচ্ছেদ?
বলা হয়ে থাকে,মনের মিল না থাকলে সম্পর্ক টিকে না। ফলাফল বিবাহবিচ্ছেদ। কিন্তু দেরি করে বিয়ে করলেও ডিভোর্সের আশঙ্কা বেশি থাকে! যাঁরা ৩২ বছরে পা দিয়ে বিয়ে করে করেন অর্থাৎ দেরি করে বিয়ে করে তাঁদের সম্পর্ক না টেকার হার বেশি- যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত একটি গবেষণার বরাত দিয়ে এমন তথ্যই জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। এতে আরো বলা হয়, যারা ২০ বছরের কোটায় বিয়ে করে, তাদের সম্পর্ক ভাঙার প্রবণতা অনেক কম থাকে।
গবেষণায় বলা হয়, ৩২ বছরের পর বিয়ে করার কারণে প্রতি বছর ৫% করে বিবাহবিচ্ছেদের সংখ্যা বাড়ছে। অথচ আগের গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে যে,যাঁরা দেরিতে বিয়ে করেন তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের হার অনেক কম ছিল।
‘এটা অনেক বড় একটি পরিবর্তন’-বলেন যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক নিকোলাস ওলফিঙ্গার। নিকোলাস আরো বলেন,‘আমার জানা মতে,সাম্প্রতিক সময়ে ৩০ বা এর বেশি বয়সে বিয়ের কারণে বিবাহবিচ্ছেদের ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে গেছে।’
গবেষণার জন্য নিকোলাস ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সার্ভে অব ফ্যামিলি গ্রোথের তথ্য নিয়ে নানা বিশ্লেষণ করেছেন।
নিকোলাসের মতে, ‘এই গবেষণা থেকে দেখা গেছে,গত ২০ বছরের তুলনায় বিবাহবিচ্ছেদের এই প্রবণতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০২ সালের একটি গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে,যাঁরা ৩০ এর মধ্যে বিয়ে করেছেন তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের ঝুঁকি অনেক কমে গেছে। যেখানে পূর্বে বিবাহবিচ্ছেদের সংখ্যা তাঁদেরই বেশি ছিল।’
গবেষণার বিশ্লেষণে নিকোলাস বলেন,‘৩২ বছরের আগে যাঁরা বিয়ে করেছেন তাঁদের ক্ষেত্রে অদ্ভুতভাবে প্রতিবছরে অন্তত ১১% বিবাহবিচ্ছেদের আশঙ্কা হ্রাস পেয়েছে।’ ধারণা করা হয়, কম বয়সে বিয়ে করলে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নিতে পারে সহজে। আর তাদের মধ্যে অহমবোধ অতটা বেশি কাজ করে না, যতটা কাজ করে ৩২ বছরের পর। তাই বেশি বয়সের পর বিয়ে করলে দম্পতির ভেতর বোঝাপড়াটা কম হওয়ার শঙ্কা থাকে বা মানিয়ে নেওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়। আর এ কারণেই বিচ্ছেদের হারটাও বেশি হয় বেশি বয়সের বিয়েতে।
সবশেষে নিকোলাস বলেন,‘যাইহোক বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে যতই মতভেদ থাকুক না কেন, বর্তমানে প্রতিবছর অন্তত ৫% বিবাহবিচ্ছেদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।’ তবে গবেষকরা মনে করেন ২০ ও ৩০ বছরের মাঝামাঝি বিয়ে করাটাই উত্তম। এই সীমার আগে করলে বেশি তাড়াতাড়ি হয়ে যায় আর এর পরে করলে বেশি দেরি হয়ে যায়।