বিয়ের সিদ্ধান্তে শারীরিক সৌন্দর্য কি মুখ্য?
মানুষ সুন্দরের পূজারি। একজন সুন্দর মানুষ যেকোনো পরিবেশেই সবাইকে আকর্ষণ করতে পারেন। আসলে কথাটি এভাবে বলা উচিত যে, একজন সুন্দর মানুষের প্রতি আমরা নিজেরাই আকর্ষিত হই। তবে এ কথা সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। কারণ, কেউ কেউ এর থেকে একেবারেই বিপরীত। তাঁরা জীবনসঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সৌন্দর্যকে মুখ্য মনে করেন না। সাইকোলজিক্যাল সায়েন্সের এক গবেষণায় এমনটাই বলা হয়েছে। গবেষণাটির ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
আমাদের দেশের পরিস্থিতিতে বিয়ের জন্য যখন কেউ প্রথম দেখা করতে যায়, তখন শারীরিক সৌন্দর্যটাই পছন্দ হওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু যারা বিয়ের আগে থেকেই একে অপরের সঙ্গে পরিচিত বা প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে, তারা বিয়ের ক্ষেত্রে শারীরিক সৌন্দর্যকে ততটা প্রাধান্য দেয় না।
গবেষণায় আরো দেখা গেছে, যেসব দম্পতি তাঁদের বিয়ের কথাবার্তা শুরু হওয়ার পর অন্তত এক মাস নিজেরা ফোনে কথা বলেন এবং দেখা করেন, তাঁদের মধ্যে অপরিচিত ভাবটা কিছুটা হলেও কেটে যায়। তাই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের কাছে শারীরিক সৌন্দর্যটা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে না।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সাইকোলজির অধ্যাপক এবং গবেষণার সহ-গবেষক এলি ফিনকেল বলেন, ‘গবেষণায় আমরা দুই ধরনের সম্পর্ক দেখতে পেয়েছি, যাদের আগে থেকেই পরিচয় রয়েছে এমন মানুষ বিয়ের আলাপের সময় সৌন্দর্যের থেকে মানুষটাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। আর যারা পূর্বপরিচিত নয়, তারা বিয়ের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে শারীরিক সৌন্দর্যকে বেশি প্রাধান্য দেয়।’
এলি ফিনকেল আরো বলেন, ‘যদি বিয়ের আগেই মানুষটি তার কাছে পরিচিত হয় এবং তারা যদি বন্ধু হয়, তাহলে শারীরিক সৌন্দর্যটা বিয়ের ক্ষেত্রে মুখ্য বিষয় হিসেবে কাজ করে না।’
গবেষকরা ১৬৭ যুগলের ওপর গব্ষেণা চালিয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৬৭ প্রেমিক যুগল এবং ১০০ যুগল দম্পতি। এদের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা চালান গবেষকরা। এদের মধ্যে কারো কারো সম্পর্কের বয়স তিন মাস, কারো আবার দীর্ঘ ৫৩ বছরের সম্পর্ক, আবার কারো ক্ষেত্রে আট বছরের সম্পর্ক।
গবেষণায় দেখা গেছে, তাঁদের মধ্যেই প্রেমটা দীর্ঘ সময় ধরে ছিল, যাঁরা বিয়ের আগে থেকেই পরিচিত ছিলেন এবং তাঁদের সম্পর্কে শারীরিক সৌন্দর্য সেভাবে প্রভাব ফেলেনি। কিন্তু যাঁরা বিয়ের আগে পরিচিত ছিলেন না এবং বিয়ের কথাবার্তার সময় থেকেই পরিচয়, তাঁদের ক্ষেত্রে শারীরিক সৌন্দর্যই সম্পর্কের নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।