মাটিতে পড়েও ড্যারেন স্যামির হাততালি
ভদ্র ও বিনয়ী বলে ক্রিকেটবিশ্বে বেশ সুনাম রয়েছে ড্যারেন স্যামির। প্রতিপক্ষের স্লেজিংয়েও মুচকি হাসি উপহার দেন এই ক্যারিবীয় ক্রিকেটার। তবে ড্যারেন স্যামি যে এত বেশি বিনয়ী ও ভদ্র, সেটা বোধ হয় অনেকেরই জানা ছিল না! প্রতিপক্ষ বোলারের দুর্দান্ত ইয়র্কারে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান তিনি। মাটিতে লুটিয়ে থেকেই বোলারকে অভিবাদন জানাতে হাততালি দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক অধিনায়ক।
ঘটনাটা গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ব একাদশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচের। পাকিস্তানের দেওয়া ১৯৮ রানের জবাবে ব্যাট করছিল বিশ্ব একাদশ। তারকা ব্যাটসম্যানরা সাজঘরে ফেরায় শেষ ওভারের আগেই প্রায় পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায় বিশ্ব একাদশ দলের। শেষ ওভারে জয়ের জন্য বিশ্ব একাদশের দরকার ছিল ৩৪ রান। হাসান আলির প্রথম বলে ছয় মেরে সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন ড্যারেন স্যামি। তবে পরের বলেই ক্যারিবীয় অলরাউন্ডারকে কুপোকাত করে ফেলেন হাসান।
দারুণ এক ইয়র্কার দেন পাক পেসার। কোনোমতে বলটা ঠেকিয়ে দেন স্যামি। তবে শরীরটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। উইকেটের ওপরেই আছড়ে পড়েন তিনি। মাটিতে শুয়েই হাততালি দেওয়া শুরু করেন ক্যারিবীয় হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান। পরে হাসান আলি এসে স্যামিকে টেনে তোলেন। ম্যাচে ২০ রানে জিতেছে পাকিস্তান।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বিশ্ব একাদশের অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসিস। শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। দলীয় ৮ রানে ফখর জামানকে ফেরত পাঠান মরনে মরকেল। এরপর প্রতিরোধ গড়েন বাবর আজম ও আহমেদ শেহজাদ। এ দুজন যোগ করেন ১২২ রান। দলীয় ১২২ রানে ফিরে যান শেহজাদ। ৩৪ বলে তিনটি বাউন্ডারিতে ৩৯ রান করেন পাক ওপেনার। খানিক বাদে ফেরেন বাবরও। তার আগে অবশ্য ৫২ বলে ৮৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন এই ব্যাটসম্যান। ১০টি চার আর দুটি ছক্কার মারেন বাবর আজম।
এরপর অবশ্য দ্রুত আরো কয়েকটি উইকেট হারায় পাকিস্তান। তবে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৯৭ রানের বিশাল স্কোর দাঁড় করায় দেশটি। পাকিস্তানের হয়ে শোয়েব মালিক ২০ বলে ৩৮ ও ইমাদ ওয়াসিম চার বলে ১৫ রান করেন। বিশ্ব একাদশের থিসারা পেরেরা নেন দুটি উইকেট। এ ছাড়া মরনে মরকেল, ইমরান তাহির আর বেন কাটিং নেন একটি করে উইকেট।
১৯৮ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বিশ্ব একাদশের। ষষ্ঠ ওভারে দলীয় ৪৩ রানে আউট হন তামিম। ১৮ রান করেন টাইগার ওপেনার। হাশিম আমলা দারুণভাবে শুরু করলেও ১৭ বলে ২৬ রানের বেশি করতে পারেননি। দুটি উইকেটই নেন রুম্মান রইস। অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসিসের দারুণ ব্যাটিংয়ে খেলায় ফেরে বিশ্ব একাদশ। ১৮ বলে ২৯ রান করেন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। অসি উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান টিম পেইন ২৫ বলে ২৫ রান করে বিদায় নিলে চাপে পড়ে যায় সফরকারী দলটি। শেষ দিকে ড্যারেন স্যামি ও থিসেরা পেরেরা আগ্রাসী ব্যাটিং করেও দলকে জেতাতে পারেননি। স্যামি ১৬ বলে ২৯ ও পেরেরা ১১ বলে করেন ১৭ রান। শেষ পর্যন্ত ১৭৭ রানে শেষ হয় বিশ্ব একাদশের ইনিংস। পাকিস্তানের হয়ে সোহেল খান, শাদাব খান ও রুম্মান রইস নেন দুটি করে উইকেট।