সারা দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) দিনব্যাপী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘প্রযুক্তিচালিত সমাজ ব্যবস্থায় ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টিং পেশা’।

গত শুক্রবার ইনস্টিটিউটের নিজস্ব মিলনায়তনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয়বারের এ আয়োজনের উদ্বোধনী সেশনের মাধ্যমে এই দিনব্যাপী আয়োজন শুরু হয়। পরে তিনটি টেকনিক্যাল সেশন এবং একটি সমাপনী সেশনে আলোচনা, প্রশ্নোত্তর ও ক্রেস্ট সার্টিফিকেট বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

আইসিএমএবির সহসভাপতি এবং শিক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান জামাল আহমেদ চৌধুরী এফসিএমএ অনুষ্ঠানের শুরুতে অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে সংক্ষিপ্ত স্বাগত বক্তব্য দেন।

দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রথম টেকনিক্যাল সেশনে বক্তারা। ছবি : সংগৃহীত

আইসিএমএবির সভাপতি এম আবুল কালাম মজুমদার এফসিএমএ তাঁর বক্তব্যে এ পেশার বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা এবং চ্যালেঞ্জের বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই পেশায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁদেরও নতুন এবং ভিন্ন সেবাদানে সক্ষম হয়ে উঠতে হবে।

আইসিএমএবির একাডেমিক অ্যাফেয়ার্সের পরামর্শক এবং ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. নিখিল চন্দ্র শীল এফসিএমএ উদ্বোধনী সেশনে ‘ইন্ট্রোডিউসিং দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)’ শিরোনামে একটি প্রেজেন্টেশন দেন, যেখানে তিনি ইনস্টিটিউটের সূচনা, সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। একই সঙ্গে তিনি এই পেশার শিক্ষার কারিকুলামের বিষয়েও ধারণা দেন। ইনস্টিটিউটের সচিব ও অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. আবদুর রহমান খান এফসিএমএ ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন।

প্রথম টেকনিক্যাল সেশনে টেলিকমিউনিকেশন প্রতিষ্ঠান রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দীন আহমেদ এফসিএমএ প্রবন্ধ উপস্থাপনায় ছিলেন। ‘ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন : ইজ দি অ্যাকাউন্টিং প্রফেশন রেডি’ শিরোনামের এই সেশনে তিনি নিজস্ব উপস্থাপনায় তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তন, আসন্ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে বিভিন্ন পেশায় এর প্রভাব কীভাবে পড়বে, তার ধারণা দেন। তিনি সব পেশার মতো অ্যাকাউন্টিং পেশাদার এবং শিক্ষকদেরও এই পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত হতে এবং প্রয়োজনীয় নতুন দক্ষতা ও জ্ঞান লাভের তাগিদ দেন। গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশ লিমিটেডের ফাইন্যান্স ডিরেক্টর হাসনাইন তৌফিক আহমেদ এফসিএমএ এই উপস্থাপনার বিষয়ে বক্তব্য দিতে গিয়েও নতুন দক্ষতা এবং জ্ঞানের প্রতি গুরুত্ব দেন। সেশনটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) অতিরিক্ত সচিব ও নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতীম দেব।

দ্বিতীয় টেকনিক্যাল সেশনটির মূল ভাব ছিল ‘ইমার্জিং করপোরেট রিপোর্টিং ফ্রেমওয়ার্কস’ এবং বিষয় ছিল ‘সাসটেইনিবিলিটি রিপোর্টিং-অ্যালাইনিং উইথ দ্য ২০৩০ এজেন্ডা’। আইসিএমএবির সহসভাপতি এবং আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ খান এফসিএমএ এই সেশন পরিচালনা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ড. ইউসুফ কামাল এই সেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চিফ বিজনেস অফিসার মো. তৌহিদুল আলম খান এফসিএমএ এই সেশনে মূল প্রবন্ধের বিষয়ে বক্তব্য দেন।

তৃতীয় টেকনিক্যাল সেশনের মূল ভাব ছিল ‘করপোরেট গভর্ন্যান্স’ এবং আলোচ্য বিষয় ছিল ‘রিসেন্ট ডেভেলপমেন্টস ইন করপোরেট গভর্ন্যান্স’। আইসিএমএবির কোষাধ্যক্ষ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার বালা এফসিএমএ এই সেশন পরিচালনা করেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার আবদুল মতিন পাটওয়ারী এফসিএমএ এই সেশনে টেকনিক্যাল পেপার উপস্থাপন করেন। ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার ইলিয়াস আহমেদ এফসিএমএ মূল প্রবন্ধের বিষয়ে বক্তব্য দেন।
সমাপনী সেশনে অংশগ্রহণকারীরা অ্যাকাউন্টিং পেশা এবং এই সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্নোত্তর ও মতবিনিময় করেন। সেইসঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে ইনস্টিটিউটের কার্যনির্বাহীগণ, সাবেক সভাপতি, কাউন্সিল সদস্য, সদস্য, শিক্ষার্থী এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।