সাটুরিয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের কিস্তি আদায়, ২০০ টাকা জরিমানা
মানিকগঞ্জে করোনাভাইরাসজনিত কারণে বেসরকারি সংস্থাগুলোর (এনজিও) ঋণের কিস্তি আদায়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন জেলা প্রশাসক। তবে ওই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাটুরিয়া উপজেলার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দেদারসে কিস্তি আদায় করে যাচ্ছিল গ্রামীণ ব্যাংক। খবর পেয়ে কর্তৃপক্ষকে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে উপজেলার ধানকোড়া গ্রামীণ ব্যাংক ব্যবস্থাপককে ২০০ টাকা জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামীণ ব্যাংকের ধানকোড়া শাখার এক কর্মী জানান, সাটুরিয়া উপজেলা ও ঢাকার ধামরাই উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন মিলে ধানকোড়া শাখার অধীনে গ্রামীণ ব্যাংকের মোট পাঁচটি শাখা রয়েছে। প্রতিটি শাখায় ৪০ থেকে ৬০ জন করে সদস্য রয়েছে। ব্যবস্থাপকের নির্দেশে প্রতিটি শাখা থেকে কিস্তির টাকা আদায় করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করলে দুপুরের পর কেন্দ্রগুলোতে আর কিস্তি আদায়ে যায়নি কেউ।
এ সময় ওই কর্মী আরো বলেন, করোনাভাইরাসজনিত কারণে অনেকের আয় কমে গেছে। কেন্দ্রে গেলে তারা কিস্তি দিতে অনীহা প্রকাশ করে। কিন্তু এসব কথা মানতে নারাজ ব্যাংক ব্যবস্থাপক। এ ছাড়া কিস্তির টাকা আদায়ের জন্য নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের বাড়ি বাড়ি যাওয়া এখন নিজেদের জন্যও খুব ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অচিরেই ব্যাংকের কিস্তি আদায় কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানান তিনি।
ধানকোড়া গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রাহক সাজেদা বেগম বলেন, ‘সকালে জোর করে কিস্তি আদায় করেছে ব্যাংকের লোকজন। পরে সঞ্চয়ের টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে আসছি। এখন ব্যবস্থাপক সঞ্চয়ের টাকা দিতে গড়িমসি করছে।’ অনেক অনুরোধ করার পরও তাদের কিস্তি দিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ধানকোড়া ইউনিয়নের সাহেবপাড়া এলাকার নাছিমা নামের গ্রামীণ ব্যাংকের এক গ্রাহক জানান, দুই মাস আগে তাঁর কিস্তি শেষ হয়েছে। এখন ডিপিএসের টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে এসে নাজেহাল হচ্ছেন তিনি। ডিপিএসের মেয়াদ শেষ হলেও ব্যাংকে টাকা নাই বলে বার বার তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রামীণ ব্যাংক ধানকোড়া শাখার ব্যবস্থাপক মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, কিস্তি বন্ধ রাখার বিষয়টি তিনি জানতেন না। ইউএনও জরিমানা করার পর কিস্তি আদায় বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্য লেনদেনের জন্য ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে। আর একসঙ্গে অনেকেই সঞ্চয়ের টাকার জন্য আসায় কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সাটুরিয়ার ইউএনও আশরাফুল আলম জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিস্তি আদায় করায় ব্যাংক ব্যবস্থাপককে ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরপরও যদি তারা তাদের কার্যক্রম বহাল রাখে তবে আইন অমান্য করার দায়ে জেল দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।