চট্টগ্রামে হার দেখছে বাংলাদেশ
চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থদিন আশা জাগিয়েও লড়াই জমাতে পারল না বাংলাদেশ। দিনের শুরুতে লিটন দাসের হাফসেঞ্চুরিতে কিছুটা লড়াই করে স্বাগতিকরা। তবে দ্রুতই সেই প্রতিরোধ ভেঙে ম্যাচের লাগাম টেনে ধরেছে পাকিস্তান। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে সফরকারীরা। আগামীকাল মঙ্গলবার টেস্টের শেষ দিনে ৯৩ রান তুললেই জয় দিয়ে টেস্ট রাঙাবে বাবর আজমের দল।
আজ সোমবার টেস্টের চতুর্থ দিন দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বিনা উইকেটে ১০৯ রান তুলেছে পাকিস্তান। জয়ের জন্য শেষ দিনে তাদের চাই মাত্র ৯৩ রান। তবে বাংলাদেশের সামনে সমীকরণটা কঠিন। জিততে হলে পাকিস্তানকে অলআউট করতে হবে বাংলাদেশকে।
আজ শেষ সেশনে শক্ত জুটি উপহার দিয়েছেন আবিদ আলী ও আবদুল্লাহ শফিক। প্রথম ইনিংসের মতোই দুজনেই সাবলীল ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানকে এগিয়ে নিচ্ছেন। আজ শেষ সেশনে বাংলাদেশের চার বোলার মিলে তাদের জুটি ভাঙতে পারেনি। দুজনেই হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। ১০৫ বলে অপরাজিত ৫৬ রান করেছেন আবিদ। তাঁর সঙ্গে ৯৩ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত শফিক।
চতুর্থ দিনের শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। তবে, চরম চাপের মুখ থেকে বাংলাদেশকে কিছুটা হলেও পথ দেখান লিটন দাস। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা লিটন দ্বিতীয় ইনিংসে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। তাঁর ব্যাটে চড়েই চট্টগ্রাম টেস্টে পাকিস্তান ২০২ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ।
লিটনের ব্যাটে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৭ রান করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসের লিড ছিল ৪৪ রান। মোট ২০১ রানের পুঁজি পায় মুমিনুল হকের দল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৯ রান করেন লিটন।
গতকাল রোববার দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ। যা আজ দিনের দ্বিতীয় সেশনে থামে। তবে, প্রথম ইনিংসের তুলনায় হতাশই করলেন ব্যাটাররা। কাল ব্যাটিংয়ে নেমে শেষ দিকে যতটুকু ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ, তাতে মিলেছে শুধুই হতাশা। ব্যাটিংয়ে নেমে বরাবরের মতো ব্যর্থ ওপেনিং জুটি।
দলীয় ১৪ রানেই ফেরেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। এরপর একে একে ফেরেন সাইফ হাসান, মুমিনুল হক এবং নাজমুল হোসেন শান্ত।
আজ দলীয় ৩৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ শুরুতেই হারায় মুশফিকুর রহিমকে। দিনের শুরুতেই বাজেভাবে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলেন অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিক। দিনের তৃতীয় বলেই মুশফিককে বোল্ড করেছেন হাসান আলী। ৩৩ বলে ১৬ রান করে বিদায় নিয়েছেন তিনি।
এরপর হেলমেটে বল লাগায় আহত হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ইয়াসির আলীকে। দারুণ ব্যাটিংয়ের আভাস দেওয়া ইয়াসিরকে থামকে হয় ৩৬ রানে। মাঝে ফিরে গেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও ইয়াসিরের কনকাশন সাবে নামা নুরুল হাসান সোহান।
দ্রুত উইকেট হারানোর মধ্যে হাল ধরেন লিটন। তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১১তম টেস্ট হাফসেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ৫৯ রানে ভাঙে তাঁর প্রতিরোধ। লিটন ফিরলে ১৫৭ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ৩৩০ রান করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১১৪ রান করেন লিটন। মুশফিকুর রহিম করেন ৯১ রান। বিপরীতে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে ২৮৬ রানে থামে পাকিস্তান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৩৩০
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস: ২৮৬
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস : ১৫৭ ( সাদমান ১, সাইফ ১৮, নাজমুল ০, মুমিনুল ০, মুশফিক ১৬, ইয়াসির আহত অবসর ৩৬, লিটন ৫৯, মিরাজ ১১, সোহান ১৫, তাইজুল ০, আবু জায়েদ ০, ইবাদত ০*; আফ্রিদি ১৫-৮-৩২-৫, হাসান ১১-০-৫২-২, ফাহিম ৮-৩-১৬-০, নুমান ৯-৩-২৩-০, সাজিদ ১৩.২-১-৩৩-৩)।
পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস : ১০৯ (আবিদ ৫৬, শফিক ৫৩ ; তাইজুল ১৬-৩-৩৭-০, ইবাদত ৫-১-২৩-০, রাহি ২-০-১৩-০, মিরাজ ১০-২-৩৬-০)।