টি-টোয়েন্টিতে নতুন ভূমিকার জন্য মুশফিকের প্রস্তুতি
বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মুশফিকুর রহিম আসন্ন এশিয়া কাপকে সামনে রেখে জোরেশোরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে নেটে নিজেকে তৈরি করছেন।
জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি সেটআপে ফিরেছেন মুশফিক। সর্বশেষ গত মার্চে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন তিনি। টিম ম্যানেজমেন্ট এশিয়া কাপে মুশফিকের বিষয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করছে। তাঁকে নতুন ভূমিকায় দেখার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো আসার পর এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আগামীকাল শুক্রবার ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফেরার কথা এই প্রোটিয়া কোচের।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ব্যক্তিগত অনুশীলনে মুশফিককে ভিন্ন মানসিকতা নিয়ে প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার সাধারণত পাওয়ার স্ট্রোক অনুশীলনের আগে কিছুটা সময় নেন। তবে এবার তাঁকে শুরু থেকেই সব বল মাঠের বাইরে মারতে দেখা গেছে।
গতকাল বুধবার কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম মুশফিকের এশিয়া কাপের প্রস্তুতি দেখতে গিয়েছিলেন। অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘মুশফিক যখন বিকেএসপিতে ছিলেন, তিনি একজন ওপেনার ছিলেন এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি (কারণ আমি সেই সময়ে ইনস্টিটিউটের সাথে জড়িত ছিলাম) এবং পরে তিনি নিজের ক্যারিয়ারের জন্য মিডল অর্ডারে নেমেছিলেন। সে এখন একজন মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান এবং ইনিংস ওপেন করাটা একটা চ্যালেঞ্জ, এবং আমি নিশ্চিত নই যে সে নিজেকে কতটা প্রস্তুত করতে পারে (ওপেনিংয়ের জন্য)। তবে তার অভিজ্ঞতা স্বাভাবিকভাবেই তাকে সাহায্য করবে, টি-টোয়েন্টিতে প্রয়োজন হলে মুশফিক ওপেন করতে পারেন।’
মুশফিকের মেন্টর আরও বলেন, ‘আমি দেখেছি মুশফিক বড় বড় ছক্কা মারার চেষ্টা করছে। কিন্তু আগে আমরা তা দেখিনি, কারণ সে সময় সে তার গতি অনুযায়ী ব্যাট করতো। ভিন্নভাবে প্রস্তুতি নিত। কিন্তু এখন পরিবর্তন এসেছে (তার প্রস্তুতিতে)।’
মুশফিকের ওপেন করা প্রসঙ্গে নাজমুল বলেন, ‘মুশফিক ওপেন করতে পারবে, যদি সে সঠিক মনোভাব নিয়ে খেলে। কারণ একজন ভালো খেলোয়াড় হওয়া গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং কার্যকর খেলোয়াড় হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। মুশফিক ওপেন করলে তাকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ধরন অনুযায়ী খেলতে হবে এবং টি-টোয়েন্টির ব্যাকরণ অনুসরণ করতে হবে। যদি সে ৮০ রান করে, তা হতে হবে ৫০ বা ৫৫ বলে, তা না হলে কোনো লাভ হবে না। দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক থাকলে তা সম্ভব। মানসিক পরিবর্তন প্রয়োজন।’
নাজমুল যোগ করেছেন, মুশফিকের এখন পাওয়ার হিটিং সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা রয়েছে এবং নতুন বল খেলা তার জন্য কোনো সমস্যা হবে না। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী যে মুশফিক পাওয়ার হিটিং করতে পারে। আমি আশা করেছিলাম যে জিম্বাবুয়েতে সে উদ্বোধনী ম্যাচে সুযোগ নেবে, যেখানে সে ৫০ রান করেছিল। আমার মনে হয় সে পাওয়ার হিটিং একটু ভালোভাবে বুঝতে পারছে। আজও (বুধবার) আমি তাকে কিছু খেলতে দেখেছি। আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে, সে অনুশীলন করলে, সে আরও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে এবং কার্যকরভাবে খেলবে।’
‘মুশফিক কঠিন কন্ডিশনে বড় ইনিংস খেলেছে, তাই আমি নিশ্চিত সে কাটিয়ে উঠতে পারবে (নতুন বলের মুখোমুখি হওয়ার চ্যালেঞ্জ)।’
বাংলাদেশের ১৭ সদস্যের স্কোয়াডে উদ্বোধনী ব্যাটার হিসেবে এনামুল হক বিজয় এবং পারভেজ হোসেনকে নেওয়া হয়েছে। নিয়মিত ওপেনার লিটন দাসের অনুপস্থিতে তাঁরা খেলবেন। কারণ তিনি চোটের কারণে বাদ পড়েছেন। টিম ম্যানেজমেন্ট অন্য ওপেনার হিসাবে সৌম্য সরকার বা নাঈম শেখকে বেছে নেয়নি। কারণ তারা স্পিনের বিরুদ্ধে ভালো খেলতে পারেন না। গ্রুপ পর্বে আফগানিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মতো দলের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই দুটি দলের স্পিন আক্রমণ বেশ ভালো।
ক্রিকবাজের খবরে জানা গেছে, এশিয়া কাপে উইকেকিপিং করবেন মুশফিক। চোটে আক্রান্ত নুরুল হাসান সোহান ১৭ সদস্যের স্কোয়াডে আছেন। তিনি এর আগে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে প্রথম পছন্দের উইকেটরক্ষক ছিলেন।