তাসকিনের দিনে ইতিহাস গড়তে বাংলাদেশের চাই ১৫৫ রান
দুদলের সামনেই সিরিজ জয়ের সমান সুযোগ। ম্যাচটি এক কথায় রূপ নিয়েছে অলিখিত ফাইনালে। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বল হাতে দুর্দান্ত খেললেন তাসকিন আহমেদ। আগুনে বোলিংয়ে একাই নিলেন পাঁচ উইকেট। ডানহাতি পেসারের দাপুটে বেশিদূর যেতে পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের অল্প রানে আটকে দিল বাংলাদেশ।
আজ বুধবার তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে ৩৭ ওভারে ১৫৪ রান তুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই রান টপকাতে পারলেই প্রথমবার দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়বে বাংলাদেশ।
বল হাতে দারুণ খেলেছেন তাসকিন। ৩৫ রান দিয়ে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। এটা তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেরা বোলিং। এর আগেরটিও অবশ্য পাঁচ উইকেটের। তবে সেটা হলো ২৮ রানে ৫ উইকেট।
সেঞ্চুরিয়নের সুপার স্পোর্টস পার্কে টস জিতে বাংলাদেশকে বোলিংয়ে পাঠায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে ভালো কিছুর আভাস দেয় স্বাগতিকরা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলাতে থাকে সেঞ্চুরিয়নের চিত্র। দারুণ বোলিংয়ে প্রোটিয়াদের রানের লাগাম টানে বাংলাদেশ।
যার শুরুটা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ডি কক। সেই ডি কককে ফিরিয়েই প্রথম সাফল্য এনে দেন মিরাজ। এই অফ স্পিনারের বল লং অফ দিয়ে মারতে চেয়েছেন ডি কক। তবে টাইমিং মেলাতে পারেননি। লং অফে থাকা মাহমুদউল্লাহ সহজ ক্যাচ নিয়ে বিদায় করেন ডি কককে (১২)।
এরপর প্রোটিয়া শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। প্রথমে ফেরান তিনে নামা কাইল ভেরেইনাকে। এরপর দ্বিতীয় শিকার বানান ইয়েনামান মালানকে। ওপেনিংয়ে নেমে থিতু হয়ে গিয়েছিলেন মালান। ৩৯ রানে তাঁর প্রতিরোধ ভাঙেন তাসকিন।
তিন উইকেট হারানোর ধাক্কা না কাটতেই অধিনায়ক বাভুমাকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সাকিবের বলে সুইপ করতে যান বাভুমা। কিন্তু বাংলাদেশি তারকার বল আঘাত হানে বাভুমার প্যাডে। এলবির আবেদন তোলেন সাকিব। তাতে সাড়া দেন আম্পায়ার। ১১ বলে ২ রান করে ফেরেন বাভুমা। এরপর দারুণ এক ডেলিভারিতে রাসি ফন ডার ডাসেনকে সাজঘরের পথ দেখান শরিফুল।
৮৩ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করতে জুটি বাধেন ডেভিড মিলার ও ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস। এই জুটিও টিকতে দেননি তাসকিন। প্রিটোরিয়াস নিজের তৃতীয় শিকার বানিয়ে ২৪ রানে জুটি ভাঙেন ডানহাতি পেসার। ২০ রানে আউট হন প্রিটোরিয়াস। তবুও উইকেটে টিকে ছিলেন মিলার। তাঁকেও ফিরিয়ে দেন তাসকিন। এরপর রাবাদার উইকেট তুলে নিয়ে পাঁচ উইকেটে স্বাদ পান ডানহাতি পেসার।
দ্রুত উইকেট হারানোর দিনে বেশিদূর যেতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ দিকের ব্যাটারদের ওপর ভর করে শেষ পর্যন্ত ১৫৪ রানের পুঁজি পায় প্রোটিয়ারা।
বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন ছাড়াও ২২ রান খরচায় সাকিব নেন দুটি উইকেট। মিরাজ ও শরিফুলের শিকারও সমান একটি করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা : ৩৭ ওভারে ১৫৪ (ডি কক ১২, মালান ৩৯, কাইল ৯, বাভুমা ২, রাসি ফন ডার ডাসেন ৪, মিলার ১৬, প্রিটোরিয়াস ২০, কেশব ২৮, রাবাদা ৪, শামছি ৩, লুঙ্গি ০; তাসকিন ৯-০-৩৫-৫, মিরাজ ৫-০-২৭-১, মুস্তাফিজ ৭-০-২৩-০, সাকিব ৯-০-২৪-২, শরিফুল ৭-০-৩৭-১)।