পারভেজের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে বরিশালের জয়
২২১ রানের বিশাল লক্ষ্য। জবাব দিতে নেমে বিন্দুমাত্র চাপে দেখা গেল না ফরচুন বরিশালকে। নাজমুল হোসেন শান্তের সেঞ্চুরির দিনে শতকের দেখা পেলেন বরিশালের তরুণ ব্যাটসম্যান পারভেজ হোসেন ইমন। বাংলাদেশের সবচেয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়লেন তিনি। তরুণ এই ক্রিকেটারে ভর করে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীকে আট উইকেটে হারাল ফরচুন বরিশাল।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সাত উইকেটে ২২০ রান করে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৮.১ ওভারে জয় তুলে নেয় ফরচুন বরিশাল। রাজশাহীর পক্ষে সর্বোচ্চ ১০৯ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মাত্র ৫৪ বলে তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল চারটি বাউন্ডারি ও ১১টি ছক্কায়। অন্যদিকে বরিশালের পক্ষে সর্বোচ্চ মাত্র ৪২ বলে ১০০ রানের ইনিংস খেলেন পারভেজ। বরিশালকে বিশাল জয় উপহার দেওয়া পারভেজের ইনিংসটি সাজানো ছিল নয়টি বাউন্ডারি ও সাত ছক্কায়।
রাজশাহীর দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তামিম ইকবাল ও সাইফ হাসানে দারুণ শুরু করে ফরচুন বরিশাল। ওপেনিং জুটিতে দুজন মিলে তোলেন ৪৪ রান। পঞ্চম ওভারে সাইফ ফিরলে ভাঙে ওপেনিং জুটি। ফেরার আগে ২৭ রান করেন সাইফ। সাইফ ফিরলে পারভেজকে নিয়ে দারুণ ছন্দে এগিয়ে নেন তামিম। এর মধ্যে ৩৪ বলে হাফসেঞ্চুরি স্পর্শ করেন তামিম। সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি তামিম। ৫৩ রানে রানআউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ১৬১ রানে বরিশাল হারায় তাঁদের দ্বিতীয় উইকেট।
তামিমের ফেরার পরও বেশ সাবলীলভাবে ব্যাটিং করেন পারভেজ। শেষ বলে চার হাঁকিয়ে তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। বরিশালও পেয়ে যায় আট উইকেটের জয়। প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে নিজের সপ্তম ম্যাচেই সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন তরুণ এই ব্যাটসম্যান।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন আনিসুল ইসলাম ও নাজমুল। শুরুর দিকে নাজমুলের চেয়ে বেশি আগ্রাসী ছিলেন আনিসুল। ধীরে ধীরে নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে ভয়ংকর হয়ে ওঠেন নাজমুল। পাওয়ার প্লেতে দুজন মিলে তোলেন ৬৪ রান।
এরপর মাত্র ২৫ বলে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি স্পর্শ করেন আনিসুল। তাঁর হাফসেঞ্চুরিতে ছিল ছয় বাউন্ডারি ও দুই ছক্কা। আনিসুলের হাফসেঞ্চুরি ছোঁয়ার আগ মুহূর্তে চোটে পড়েন বরিশালের বোলার আবু জায়েদ রাহি। ৮.২ ওভারে স্ট্রেচারে করে মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।
গুরুত্বপূর্ণ বোলারকে হারিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়ে বরিশাল। এর মধ্যে ৩২ বলে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি স্পর্শ করেন নাজমুল। হাফসেঞ্চুরির পর আরো আগ্রাসী হয়ে ওঠেন রাজশাহীর অধিনায়ক। এর মধ্যে ৬৯ রানে ফিরে যান আনিসুল।
এরপর বরিশালের বোলারদের তুলোধুনো করে ৫২ বলে পৌঁছে যান তিন অঙ্কের ঘরে। ৩২ বলে হাফসেঞ্চুরি করা নাজমুল পরের ২০ বলে স্পর্শ করেন ১০০। তাঁর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে চড়ে শেষ পর্যন্ত ২২০ রানে থামে রাজশাহী।
ইনিংসের শেষ ওভারে বরিশালের হয়ে হ্যাটট্রিক করেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। ইনিংসের শেষ ওভারে ফরহাদ রেজা, নাজমুল ও নুরুল হাসান সোহানকে ফিরিয়ে টুর্নামেন্টের প্রথম হ্যাটট্রিক তুলে নেন রাব্বি। ওই এক ওভারে মোট চারটি উইকেট নেন রাব্বি।
মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী : ২০ ওভারে ২২০/৭ (নাজমুল ১০৯, আনিসুল ৬৯, রনি ১৮, মেহেদী ০, নুরুল ১২, ফরহাদ ০, সাইফউদ্দিন ৪, মুকিদুল ০, ফজলে ৬; রাব্বি ৪-০-৪৯-৪, মিরাজ ৩-০-৩৫-০, সুমন ৪-০-৪৩-২, রাহি ২.১ -০-১১-০, আফিফ ২.৫-০-৩২-০)।
ফরচুন বরিশাল : ১৮.১ ওভারে ২২১/২ (তামিম ৫৩, সাইফ ২৭, পারভেজ ১০০*, আফিফ ২৬* ; (সাইফউদ্দিন ৪-০-৪০-১, মেহেদী ৪-০-৪০-০, এবাদত ৩-০-৩৯-০, ফরহাদ ৩-০-৪৭-০)।
ফল : আট উইকেটে জয়ী বরিশাল।