‘বাংলাদেশে অভিজ্ঞতার কোনো মূল্য নেই’
‘শুধু বাংলাদেশে আমি দেখেছি, যখন সেঞ্চুরি করি তখন লোকেরা আমাকে ব্র্যাডম্যানের সঙ্গে তুলনা করে, কিন্তু যখন আমি রান করি না, তখন যেন আমি নিজের জন্য একটি গর্ত খুঁড়ি। আমি সিনিয়র খেলোয়াড়দের একজন। যদি মাঠের বাইরের বিষয়গুলো মোকাবিলা করতে আমাকে এত সময় ব্যয় করতে হয়, তবে মাঠের দায়িত্বগুলো তাতে প্রভাবিত হয়।’
চতুর্থ দিনের খেলার পর সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকুর রহিম খানিকটা আবেগ তাড়িত হয়ে এই কথাগুলো বলেন। এমন দিনে তিনি ক্যারিয়ারের অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরি করেন। প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ৫০০০ রান গড়ার কীর্তিও গড়েন।
ডানহাতি এই ব্যাটার সাম্প্রতি কয়েক মাস খুবই বাজে সময় পার করেছিলেন। ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি করার পর থেকে তিনি যে ১৮টি ইনিংস খেলেছেন, তাতে তিন-অঙ্কের কোটায় পৌঁছতে পারেননি। একমাত্র ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনি ৯১ রান করেছিলেন। এই সময়ের মধ্যে একমাত্র পঞ্চাশ প্লাস স্কোরটি সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে এসেছিল।
আজ বুধবার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মুশফিক সেঞ্চুরি করেন। দিনের খেলা শেষে মুশফিকুর বলেন, 'আমি নিশ্চিত সেঞ্চুরি করার পর আমাকে কিছুটা উদযাপন করতে দেওয়া হবে, তাই না? সে (ফার্নান্দো) গরমে আমার দিকে বোলিং করছিল। তাদের দুই পেসারই দুর্দান্ত ছিল। এই ধরনের লড়াই সাধারণত আপনাকে অনুপ্রাণিত করে। আমরা কয়েকটি শব্দ বিনিময় করেছি, কিন্তু এটি ক্রিকেটের অংশ। আমরা পরে একে অপরের প্রশংসা করেছি।’
সমালোচকদের বিষয় নিয়ে মুশফিক বলেন, ‘একজন খেলোয়াড়ের জন্য তা কাম্য নয়। আমি মনে করি বাংলাদেশে অভিজ্ঞতার কোনো মূল্য নেই। ১৭ বছর ধরে খেলাটা অনেক বড় ব্যাপার। আমার জন্য যা অপেক্ষা করছে আল্লাহ তা লিখে রেখেছেন, আমি সেটাই ভালোভাবে করতে চাই।’
সাবেক অধিনায়ক নিজের সাফল্য সম্পর্কে বলেন, ‘প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে ৫০০০ রান ছুঁতে পারাটা দারুণ অনুভূতি। কিন্তু আমি নিশ্চিত, আমি শেষ নই। আমাদের সিনিয়র এবং জুনিয়রদের মধ্যে অনেক যোগ্য খেলোয়াড় আছেন যারা ৮০০০ বা ১০,০০০ রান ছুঁতে পারবেন।’
‘আমার লক্ষ্য (আমার অভিষেক টেস্টে) ছিল দ্বিতীয় টেস্ট খেলা (হাসি)। আমি আমার প্রথম টেস্টে ভালো করতে পারিনি। একজন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হওয়ার কারণে আমি সবসময় টেস্টকে প্রাধান্য দিয়েছি। আমি সবসময়ই দীর্ঘ সময় ধরে টেস্ট খেলতে চেয়েছিলাম, যাতে আমি বড় অর্জন নিতে পারি। সাফল্যের কোনো সীমা নেই, তবে আমি আমার অর্জনে খুব খুশি।’
এদিন তামিম ইকবালকে ছাড়িয়ে যান মুশফিক। তামিম তৃতীয় দিনে সেঞ্চুরি করেন।