বিতর্কের পর ড্রেসিংরুম থেকে যে বার্তা দিলেন কোহলি
আইপিএলে গেল রাতে লঙ্কাকাণ্ড বাধিয়ে দেন বিরাট কোহলি ও গৌতম গম্ভীর। ম্যাচ শেষে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করে বর্তমানে তুমুল আলোচিত দুই তারকা। তবে তাঁদের এই উত্তেজনা মাঠেই শেষ হয়ে যায়নি। ড্রেসিংরুমে ফিরেও গম্ভীরকে বার্তা দিয়েছেন কোহলি।
ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুম থেকে এক ভিডিও বার্তায় প্রথমে ম্যাচের ফল নিয়ে কথা বলেন কোহলি। এরপর একটু খোঁচাও মেরে বসেন। কোহলি বলেছেন, ‘এটা আসলে দারুণ জয়। এভাবেই এগিয়ে যাও। প্লে–অফ বিবেচনায় নিলে এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ জয় ছিল। ওদের (লখনৌ) মাঠে আমরাই বেশি সমর্থন পেয়েছি। এটা একটা অসাধারণ অনুভূতি। এটা বুঝিয়ে দিয়েছে, সবাই দল হিসেবে আমাদের কতটা পছন্দ করে। ছোট সংগ্রহ গড়েও আমরা নিজেদের দেখিয়েছি। সবার মধ্যে বিশ্বাস ছিল, আমরা পারব।’
এরপর যা বলেছেন তাতে বুঝতে বাকি নেই যে তিনি কার উদ্দেশে কথাগুলো বলেছেন। তাঁর ভাষায়, ‘যদি তুমি এটা দিতে পারো, তাহলে নিতে পারার মানসিকতাও থাকতে হবে। নিতে না পারলে দিতে এসো না।’
গতকাল সোমবার (১ মে) লখনৌর একানা স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে নয় উইকেটে ১২৬ রান তোলে আরসিবি। বোলিংয়ে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী আচরণ করতে থাকেন কোহলি। ম্যাচের মধ্যেই নবীন-উল-হকের সঙ্গে কিছুটা ঝামেলা হয়ে যায় কোহলির। যে রেশ গড়ায় ম্যাচের শেষেও। ম্যাচ শেষে নবীনের সঙ্গে বিরাটকে হাত মেলাতে দেখা যায়। তারপরই দুজনের মধ্যে কিছু কথা বলতে দেখা যায়। শেষে বিরাটের হাত ছেড়ে দেন নবীন। দুই দলের খেলোয়াড়রা তাদের সরিয়ে নিয়ে যান।
এরপর লখনৌ তারকা কাইল মায়ার্সের সঙ্গেও কথা বলতে থাকেন কোহলি। দুজনে হাঁটতে-হাঁটতেই কথা বলছিলেন। সে সময় গম্ভীর চলে আসেন। মায়ার্সের হাত ধরে সরিয়ে নিয়ে যান লখনৌ মেন্টর। তখন গম্ভীরকে কিছু একটা বলতে দেখা যায়। তবে কোহলির উদ্দেশে কিছু বলেছিলেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। প্রাথমিকভাবে গম্ভীর এবং কোহলির কোনও কথা কাটাকাটিও হয়নি। কোহলি যে দিকে হাঁটছিলেন, তিনি সেদিকে চলে যান। গম্ভীররা উল্টোদিকে চলে যান। কিন্তু তারপরই শুরু হয় ঝামেলা।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, গম্ভীর আচমকা ফিরে তাকান। সম্ভবত তাকে কিছু বলা হয়েছিল। জবাবে তিনিও উত্তেজিতভাবে কিছু বলতে থাকেন। লখনৌ অধিনায়ক কেএল রাহুল, কৃষ্ণাপ্পা গৌতমরা গম্ভীরকে আটকানোর চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হয়নি। কোহলির দিকে তেড়ে যান গম্ভীর। পাল্ তেড়ে আসেন কোহলিও। একেবারে মুখোমুখি হয়ে দুজনকে উত্তেজিতভাবে কথা বলতে দেখা যায়। কী বলছিলেন তাঁরা, তা বোঝা যায়নি।
কোহলিকে দেখে মনে হচ্ছিল যে, তিনি কিছু বোঝানোর চেষ্টা করছেন। সম্ভবত আত্মপক্ষ সমর্থনে কিছু বলছেন। পাল্টা গম্ভীর কিছু প্রশ্ন ছুড়ছেন এবং নিজের অবস্থান সঠিক বলে জানাচ্ছেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে দেখে সেখানে এসে উপস্থিত হন দুই দলের বাকি ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরা। তারা দুজনকে আলাদা করেন। কোহলিকে সরিয়ে নিয়ে যান আরসিবির অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি।
এ ঘটনার পর আইপিএলের আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে জরিমানা করা হয়েছে কোহলি, গম্ভীর ও নবীন-উল-হককে। কোহলিকে ম্যাচ ফির শতভাগ, গম্ভীরকে ৫০ শতাংশ ও পেসার নবীনকে ৫০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে।