বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড প্রথম ওয়ানডে
বৃষ্টি যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না বাংলাদেশের। ইংল্যান্ডে যাওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গী বৃষ্টি। যার ব্যত্যয় ঘটেনি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে। এবার বৃষ্টির বাধায় পরিত্যক্ত বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড প্রথম ওয়ানডে। বাংলাদেশ দলের ই্চ্ছে ছিল জয় দিয়ে মুশফিকুর রহিমের জন্মদিনটা রাঙানোর। তবে বৃষ্টি সেই ইচ্ছে পূরণ হতে দিল না।
গতকাল মঙ্গলবার (৯ মে) ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ২৪৬ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। জবাবে বৃষ্টির বাঁধায় ১৬.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ৬৫ রানের বেশি করার সুযোগ পায়নি আয়ারল্যান্ড। পরবর্তীতে খেলা আর মাঠে না গড়ানোয় ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
২৪৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেয় আয়ারল্যান্ডের দুই ওপেনার স্টিফেন দোহেনি ও পল স্টার্লিং। তবে দলীয় ২২ রানের মাথায় শরিফুলের বলে গালিতে ক্যাচ দেন স্টালিং।
স্টার্লিয়ের বিদায়ের পর দ্রুত ফিরে যান বালবার্নি। দলীয় ২৭ রানের মাথায় হাসানে ইন সুইংয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার। শুরুতেই জোড়া উইকেট হারিয়ে চাপে আইরিশরা। এরপর ডোহেনিকে তুলে নেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। দ্রুত উইকেট পাওয়ায় এবার আইরিশদের চেপে ধরার চেষ্টায় শরিফুল-হাসানরা। তবে এরপরই আঘাত হানে বৃষ্টি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করা হলেও বৃষ্টি আর না থামায় আম্পায়াররা ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরকার্ডে ২৪৬ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৬১ রান করেন মুশফিক। জয়ের জন্য আয়ারল্যান্ডের প্রয়োজন ২৪৭ রান।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম ওভারে আইরিশদের হয়ে আক্রমণে আসেন জশ লিটল। তার ওভারে চতুর্থ ডেলিভারিতে অফস্ট্যাম্প করিডোরে করা ইয়র্কার বল সরাসরি লিটনের প্যাডে আঘাত করে। আবেদনে সাড়া দিয়ে আউট দেন আম্পায়ার। মাত্র এক বল খেলে রানের খাতা না খুলেই ফিরতে হয় লিটনকে।
তামিমের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল। দলীয় ১৫ রানের মাথায় অ্যাডাইর এর বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তামিম। আউট হওয়ার আগে করেন ১৯ বলে ১৪ রান। অধিনায়ক তামিমের বিদায়ের পর সাকিবকে নিয়ে জুটি গড়েন শান্ত। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৫০ রান তোলে বাংলাদেশ।
একটা সময় মনে হচ্ছিল এই দুইজনের ব্যাটে ভালো সংগ্রহ দাঁড় করাবে বাংলাদেশ। তবে সমর্থকদের সেই আশা পূরণ হয়নি। দলীয় ৫২ রানের মাথায় গ্রাহাম হিউমের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন সাকিব। আউটের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২১ বলে ২০ রান।
সাকিবের বিদায়ের পর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে ৫০ রানের জুটি গড়েন শান্ত। ভালোই খেলছিলেন এই দুই ব্যাটার। তবে ফের ছন্দপতন। এবার ফিফটির আক্ষেপ নিয়ে ফেরেন নাজমুল শান্ত। দলীয় ১০২ রানে ক্যাম্ফারের বলে ডিপে অ্যাডাইর এর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ব্যাটার। সুযোগ ছিল ফিফটি তুলে নেওয়ার । তবে ৬৬ বলে ৪৪ রান করেন ফেরেন শান্ত।
শান্তর বিদায়ের পর মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে জুটি গড়েন হৃদয়। তবে, চতুর্থ উইকেটের পর দ্রুতই পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এবার আউট হন হৃদয়। দলীয় ১২২ রানে গ্রাহাম হিউমের ফুল লেন্থ ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ট্রাকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন হৃদয়। ৩১ বলে ২৭ করে সাজঘরে ফেরেন ডানহাতি হৃদয়।
এরপর মিরাজকে নিয়ে ফের জুটি গড়েন মুশফিক। এই দুইজনের ৬৫ রানের জুটিতে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফিরলেও ফের ছন্দপতন। দলীয় ১৮৭ রানে ৩৪ বলে ২৭ রান করে সেট হয়ে ফেরেন মিরাজ। মিরাজের বিদায়ের পর ক্যারিয়ারের ৪৪তম ওয়ানডে ফিফটি তুলে নেন মুশফিক। তবে, ফিফটি তুলে নেওয়ার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মুশফিকও। দলীয় ২২০ রানে আউট হন এই ব্যাটার। আউটের আগে খেলেন ৭০ বলে ৬১ রানের ইনিংস।
তার বিদায়ের পর শেষদিকে হাসান-শরিফুলদের ব্যাটে স্কোরবোর্ডে ২৪৬ রানের বেশি তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নিয়েছেন জশ লিটল আর দুটি উইকেট নেন গ্রাহাম হিউম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ২৪৬/৯ ( তামিম ১৪, লিটন ০, শান্ত ৪৪, সাকিব ২০, হৃদয় ২৭, মুশফিক ৬১, মিরাজ ২৭, তাইজুল ১৪, হাসান ৪*, শরিফুল ১৬, এবাদত ১*; লিটল ১০-০-৬১-৩, অ্যাডাইর ১০-১-৪৪-২, হিউম ১০-০-৩২-২, ম্যাকব্রাইন ৫-০-২১-০, ক্যাম্ফার ৮-০-৫০-১, ডকরেল ৭-০-৩২-১)
আয়ারল্যান্ড : ১৬.৩ ওভারে ৬৫/৩ (দোহেনি ১৭, স্টার্লিং ১৫, বালবার্নি ৫, টেক্টর ২১, ট্রাকার ২; হাসান ৫-০-২১-১, শরিফুল ৫-০-২১-১, এবাদত ৪.৩ -০-১৫-০, তাইজুল ২-০-৫-১)
ফলাফল: বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত