শেষ বিকেলে মুমিনুলদের হতাশা
প্রথম দুই সেশনে বোলিংয়ে দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে থামিয়ে দিয়েছে ২৮৬ রানে। লিড পেয়েছে ৪৪ রান। কিন্তু লিড পেয়েও ব্যাটিংয়ে নেমে রীতিমতো হতাশ করলেন মুমিনুলরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শেষ বিকেলটা হতাশায় কাটল বাংলাদেশের।
আজ রোববার চট্টগ্রাম টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ৩৯ রান নিয়ে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। দিন শেষে উইকেটে ১২ রানে অপরাজিত মুশফিকুর রহিম। তাঁর সঙ্গে ৮ রানে অপরাজিত আছেন অভিষিক্ত ইয়াসির আলী রাব্বি। এখন পর্যন্ত ৮৩ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ।
আলোরস্বল্পতায় আজও দিনের কয়েক ওভার খেলা হয়নি। তবে শেষ দিতে যতটুকু ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ তাতে মিলেছে শুধুই হতাশা। ব্যাটিংয়ে নেমে বরাবরের ব্যর্থ ওপেনিং জুটি। দলীয় ১৪ রানেই ফেরেন সাদমান ইসলাম। এরপর একে একে ফেরেন সাইফ হাসান, মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্রুত ৪ উইকেট হারানোর পর মুশফিক-ইয়াসিরে দিনের বাকি অংশ পার করে বাংলাদেশ।
এর আগে তাইজুল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানকে ২৮৬ রানে থামিয়ে দেয় বাংলাদেশ। মুমিনুলরা প্রথম ইনিংসে করেছিল ৩৩০ রান। তাই প্রথম ইনিংসে ৪৪ রানের লিড পায় স্বাগতিকরা।
অবশ্য ম্যাচের দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে পাকিস্তানি ব্যাটররা। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করে সফরকারীরা। দিন শেষে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান আবিদ আলী ও আবদুল্লাহ শফিক। তবে আজ দিনের শুরুতেই এই শক্ত জুটি ভাঙেন তাইজুল। ফিরিয়ে দেন শফিককে। আগের দিন ৫২ করা শফিক আজ স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ করতে পারেননি।
তিনে ব্যাট করতে নামা আজহারকেও টিকতে দেননি তাইজুল। গোল্ডেন ডাকে তাঁকে সাজঘরে পাঠান এই স্পিনার।
পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমের প্রতিরোধ ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম সেশনেই মিরাজের করা বল অফ স্টাম্পে পড়ে সোজা যাওয়ায় লাইনে যেতে পারেননি বাবর। সরে গিয়ে খেলার চেষ্টা করেন। তবে সফল হননি। বল চলে যায় স্টাম্পে। ভাঙে ২৩ রানের জুটি। ৪৬ বলে ১০ রান করেন বাবর। এরপর রিজওয়ানকে ফিরিয়ে প্রথম উইকেটের দেখা পান ইবাদত।
সতীর্থরা আসা-যাওয়ায় ব্যস্ত থাকলেও থিতু ছিলেন আবিদ। তুলে নেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি। ভয়ংকর হয়ে ওঠা এই ব্যাটারকে শেষ পর্যন্ত থামান তাইজুলই। দ্বিতীয় সেশনে আবিদকে এলবিডব্লিউ করেন তিনি। ২৮২ বলে ১৩৩ রান করে থামেন এই ওপেনার। শেষ হিকে ফাহিম আশরাফ ৩৮ রানের একটি ইনিংস খেলেন।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে বেশ উজ্জ্বল ছিলেন তাইজুল ইসলাম। ১১৬ রান দিয়ে সাত উইকেট নেন তিনি। ৪৭ রান খরচায় দুটি উইকেট নেন ইবাদত। আর মেহেদী হাসান মিরাজ পান একটি উইকেট।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ৩৩০ রান করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১১৪ রান করেন লিটন। মুশফিকুর রহিম করেন ৯১ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৩৩০ (সাদমান ১৪, সাইফ ১৪, শান্ত ১৪, মুমিনুল ৬, মুশফিক ৯১, লিটন ১১৪, ইয়াসির ৪, মিরাজ ৩৮, তাইজুল ১১, আবু জায়েদ রাহি ৮, ইবাদত ০; আফ্রিদি ২৭-৮-৭০-২, হাসান ২০.৪-৫-৫১-৫, ফাহিম ১৪-২-৫৪-২, সাজিদ ২৭-৫-৭৯-১)।
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস : ২৮৬ (আবিদ ১৩৩, শফিক ৫২, আজহার ০, বাবর ১০, ফাওয়াদ ৮, রিজওয়ান ৫, হাসান ১২, সাজিদ ৫, আশরাফ ৩৮, আফ্রিদি ১৩ ; তাইজুল ৪৪.৪-৯-১৬-৭ , ইবাদত ২৬-৭-৪৭-২, মিরাজ ৩০-৭-৬৮-১, রাহি ১২-০-৪১-০, মুমিনুল ৩-০-১২-০)।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ৩৯/৪ ( সাদমান ১, সাইফ ১৮, নাজমুল ০, মুমিনুল ০, মুশফিক ১২*, ইয়াসির ৮*; আফ্রিদি ৬-৪-৬-৩, হাসান ৫-০-১৯-১, ফাহিম ৩-১-৬-০, নুমান ৪-২-৭-০, সাজিদ ১-০-১-০)।