মাশরাফিকে জয় উপহার
বিদায়ী ম্যাচে মাশরাফি বিন মুর্তজাকে জয় উপহার দিলেন সতীর্থরা। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৪৫ রানে হারাল বাংলাদেশ। এই জয়ে টেস্ট ও ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজেও সমতা ফেরাল লাল-সবুজের দল। একই সঙ্গে জয় দিয়েই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে মাশরাফিকে বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা সারলেন সাকিব-মুশফিকরা।
সিরিজে সমতা আনতে শ্রীলঙ্কার সামনে ১৭৭ রানের লক্ষ্য রাখে বাংলাদেশ। জবাবে ১৮ ওভারে ১৩১ রানে শ্রীলঙ্কাকে বেঁধে রেখে ৪৫ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। মুস্তাফিজ চারটি ও সাকিব আল হাসান নিয়েছেন তিন উইকেট।
ব্যাট হাতে ভালো শুরুর পর বল হাতেও দারুণ করেন সাকিব-মুস্তাফিজরা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আগের ম্যাচের নায়ক কুশল পেরেরাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। সাকিবের দুর্দান্ত বলে বোল্ড হন পেরেরা। ফিরতি ওভারে আবার আঘাত হানেন সাকিব। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মাহমুদউল্লাহকে ক্যাচ দেন দিলশান মুনাবিরা।
এরপর ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা উপুল থারাঙ্গাকে ফেরান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৪০ রানে তিন উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কা তখন বিপর্যস্ত। তবে এতটুকুতে সন্তুষ্ট ছিলেন না মুস্তাফিজুর রহমান। বল হাতে নিয়েই পর পর দুই বলে গুনারত্নে ও সিরিবর্ধনেকে ফিরিয়ে দেন কাটার মাস্টার। লঙ্কানদের স্কোরটা তখনো ৪০!
এরপর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন কাপুগেদারা ও থিসারা পেরেরা। তবে সাকিব-মুস্তাফিজ মাশরাফিদের দিনে কোনো জুটিই বাংলাদেশের জয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। থিসারা পেরেরাকে স্টাম্পিংয়ের শিকারে প্যাভিলিয়নে ফেরান সাকিব। এরপর ২৩ বলে ২৭ রান করা সেকুগে প্রসন্নকে ফিরিয়ে জয়টাকে নিশ্বাস দূরত্বে নিয়ে চলে আসেন মাশরাফি।
হাফ সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে থাকা কাপুগেদারাকে ফেরান মুস্তাফিজুর রহমান। ৩৫ বলে ৫০ রান করেন এই ব্যাটসম্যান। এরপর সঞ্জয়াকে ফিরিয়ে জয়ের বাকি কাজটুকু সারেন সাইফুদ্দিন।
১৮ ওভারে ১৩১ রানে শেষ হয় শ্রীলঙ্কার ইনিংস।
এর আগে টস জিতে ৯ উইকেটে ১৭৬ রান করেছে বাংলাদেশ। ম্যাশের বিদায়ী টি-টোয়েন্টিতে জ্বলে ওঠেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। রান পেয়েছেন সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, সাকিব আল হাসানরা। সিনিয়রদের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের দিন কম যাননি মোসাদ্দেক-সাব্বিররাও।
প্রথম টি-টোয়েন্টির মতো এই ম্যাচেও শুরুর আগেই চমক ছিল বাংলাদেশ শিবিরে। কাঁধের ইনজুরির কারণে এই ম্যাচ খেলতে পারছেন না টি-টোয়েন্টিতে দেশসেরা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। তবে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে তামিমের অভাবটা বুঝতে দেননি সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েস। প্রথম ৫ ওভারেই ৫০ রানের কোটা পার করে বাংলাদেশ।
দলীয় ৭১ রানে ধৈর্য হারান সৌম্য সরকার। গুনারত্নের বলে বোলারকেই ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসেন এই ওপেনার। আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে চারটি চার ও দুটি ছয়ে ৩৪ রান করেন সৌম্য সরকার।
পরের ওভারে ফেরেন ইমরুল কায়েসও। সেকুগে প্রসন্নর বলে দ্রুত এক রান নিতে চেয়েছিলেন সাব্বির রহমান। তবে শেষ পর্যন্ত ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি ইমরুল। ২৫ বলে চারট চার ও এক ছয়ে ৩৬ রান করেন তিনি।
এরপর দারুণ খেলতে থাকা সাব্বির রহমান ফিরে যান ১৯ রান করেন। সঞ্চয়ার বলে বোল্ড হন এই ব্যাটসম্যান। উইকেটে এসে দারুণ খেলতে থাকেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ৩১ বলে ৩৮ রান করে বাংলাদেশের স্কোরটাকে ২০০ রানের আশপাশে নিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তিনি। তবে কুলাসেকারার বলে বোল্ড হয়ে ফিরে আসেন সাকিব। ১১ বলে ১৭ রান করার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও ফেরেন সাকিবের পথ ধরে।
তবে দলের স্কোর বোর্ডটা সচল রাখার দায়িত্বটা পালন করেন দুই অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মাত্র ৬ বলে ১৫ রান করেন মুশি। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭৬ রান করে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।