সাক্ষাৎকার
‘অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর সামর্থ্য আছে বাংলাদেশের’
আর কদিন বাদেই শুরু হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশের মধ্যে দুই টেস্ট সিরিজের লড়াই। টেস্টে ক্রিকেটের অন্যতম পরাশক্তি দল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কেমন করবে বাংলাদেশ, সে সম্ভাবনা নিয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেছেন জাতীয় দলের বাইরে থাকা ওপেনার রনি তালুকদার।
প্রশ্ন : অনেক অনিশ্চয়তার পর বাংলাদেশ সফরে আসছে অস্ট্রেলিয়া। বিষয়টাকে কীভাবে দেখছেন আপনি?
রনি তালুকদার : হ্যাঁ, আমাদের জন্য খুবই ভালো খবর অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ সফরে আসছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্যও তা ভালো বার্তা বটে। স্মিথদের বিপক্ষে এ সিরিজে ভালো করতে পারলে বাংলাদেশের ক্রিকেট অনেক এগিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। ঘরের মাঠে ভালো করার দারুণ একটি সুযোগও রয়েছে আমাদের।
প্রশ্ন : নিঃসন্দেহে অস্ট্রেলিয়া অনেক শক্তিশালী দল। তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশ কেমন করতে পারে বলে মনে করেন আপনি?
রনি তালুকদার : অস্ট্রেলিয়া ভালো দল এটা ঠিক, কিন্তু গত দুই-তিন বছর ধরে আমরা খুবই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা ধীরে ধীরে বড় দল হয়ে উঠছি। তা ছাড়া আমাদের এই দল খুবই ভারসাম্যপূর্ণ। তাই আমার বিশ্বাস, দুই দলের মধ্যে লড়াইটা ভালোই জমবে।
প্রশ্ন : শক্তির বিচারে বাংলাদেশের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার পার্থক্যটা কোথায় দেখছেন?
রনি তালুকদার : র্যাংকিংয়ে এখন খুব ভালো জায়গায় না থাকলেও অস্ট্রেলিয়া নিঃসন্দেহে সেরা দলগুলোর মধ্যে একটি। তাদের সঙ্গে আমাদের সামর্থ্য এবং অভিজ্ঞতায় পার্থক্য তো রয়েছেই। তারপরও বাংলাদেশ দলে বেশ কয়েকজন প্রতিভাবান ক্রিকেটার রয়েছেন, যাঁরা পারেন ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের শক্তির জায়গা কোনটি, যা প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি হতে পারে?
রনি তালুকদার : আমাদের দলের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হচ্ছে অভিজ্ঞ ব্যাটিং লাইন। তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহর পাশাপাশি তরুণ কয়েকজন ক্রিকেটার উঠে এসেছেন—যাঁরা নিজেদের সামর্থ্যের সেরাটা দিয়ে খেলতে পারলে প্রতিপক্ষের জন্য বড় চাপ দাঁড়াতে পারে। তা ছাড়া বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা এখন অনেক বেশি পরিণত।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ তে হারানোর স্বপ্ন দেখছেন। তা কি সম্ভব?
রনি তালুকদার : কোচের সঙ্গে আমিও একমত, অবশ্যই সম্ভব। তবে সাফল্য পেতে হলে তিন বিভাগেই ভালো খেলতে হবে আমাদের। প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট তুলে নিতে পারলে জয় ঘরে তোলা অসম্ভব নয়। সেই সামর্থ্য আমাদের আছেও। বিশেষ করে তরুণ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসানের মতো অলরাউন্ডার রয়েছেন, যাঁরা পারেন প্রতিপক্ষের ভীতে কাঁপন ধরাতে। তবে আমাদের সাফল্য পেতে হলে নিজেদের সেরাটা দিয়েই খেলতে হবে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের কোনো দুর্বলতা চোখে পড়ে কি?
রনি তালুকদার : এ মুহূর্তে বাংলাদেশের যদি কিছু দুর্বলতা থাকে, তা হলো পেস বোলিংয়ে। কোচ কোর্টনি ওয়ালশ পেসারদের নিয়ে কাজ করছেন। আশা করছি, দ্রুত আমাদের দলের এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠবে। পেসাররা লাইন-লেন্থ ঠিক রেখে বল করতে পারলে দলের জন্য তা বড় একটা প্লাস পয়েন্ট হবে।
প্রশ্ন : আসন্ন এই সিরিজে বাংলাদেশের হয়ে কারা ভালো করতে পারেন বলে মনে করেন আপনি?
রনি তালকদার : একটা দলের সাফল্য পেতে দলের সবাইকেই কমবেশি অবদান রাখতে হয়। তারপরও আমি বলব, ব্যাট হাতে তামিম ইকবালের ভালো করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। বল হাতে মেহেদী হাসান মিরাজ সবচেয়ে বেশি ভালো করতে পারেন। তা ছাড়া এই সিরিজে সে হতে পারেন বাংলাদেশের তুরুপের তাস। তার সামর্থ্য আছে ম্যাচের চিত্রটা পাল্টে দিতে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে যে দারুণ বল করেছিল, এই সিরিজেও সে ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
প্রশ্ন : গত বছর ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সে আত্মবিশ্বাস নিশ্চয়ই কাজে আসবে এই সিরিজেও?
রনি তালুকদার : অবশ্যই তা কাজে আসবে। সর্বশেষ সিরিজে ঘরের মাঠে আমরা ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিলাম। সে আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে পারলে এই সিরিজে আমাদের ভালো করার সম্ভাবনা খুবই বেশি। খেলোয়াড়রা ভুলত্রুটি কম করলে, সবকিছু ঠিকভাবে হলে এ সিরিজে আমরাও জিততে পারি।