একযুগ মাদক থেকে দূরে ম্যারাডোনা
তাঁর ফুটবল-প্রতিভা যেমন সবার মনে শিহরণ জাগাতো, তেমনি বিস্মিত করত মাদকের প্রতি তাঁর আকর্ষণকেও। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার মাত্র দুটো ম্যাচ পরই ডোপ পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়ে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন ফুটবল-দুনিয়ায়। সেই বিশ্বকাপ থেকে ডিয়েগো ম্যারাডোনার মর্মান্তিক বিদায় আজও কাঁদায় তাঁর বহু ভক্তকে। মাদকের অন্ধকার দুনিয়া আর্জেন্টাইন ফুটবল-কিংবদন্তির জীবনকে একসময় শঙ্কায় ফেলে দিয়েছিল। সেই দুঃসময় পেছনে ফেলে আজ তিনি সুস্থ, স্বাভাবিক। সম্প্রতি এক ভিডিওবার্তায় ম্যারাডোনা জানিয়েছেন, প্রায় একযুগ ধরে মাদকমুক্ত জীবন কাটাচ্ছেন তিনি।
ফেসবুকে পোস্ট করা ভিডিওটি ম্যারাডোনার দুবাইয়ের বাড়িতে তোলা। দুই জনপ্রিয় সমাজতান্ত্রিক নেতা হুগো শাভেজ ও ফিদেল কাস্ত্রোর যে তিনি কত বড় ভক্ত, তা আবারও জানা গেছে এই ভিডিওর মাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ম্যারাডোনার বাড়িতে শোভা পাচ্ছে ভেনেজুয়েলা ও কিউবার সাবেক দুই রাষ্ট্রপতির বাঁধানো ছবি।
বাড়ির সুইমিং পুলের সামনে টি-শার্ট ও শর্টস পরে আর্জেন্টিনার ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক জানালেন তাঁর মাদকমুক্ত জীবনের কাহিনী, ‘আমার আর কিছু প্রমাণ করার নেই। চারপাশের মানুষরাই আমার জীবন। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে মাদকমুক্ত জীবন কাটাচ্ছি। এখন আমি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠি। আগে যা পারতাম না। আমার মেয়েদের, নাতি-নাতনিদের আর আগামীতে যারা আসছে তাদের কথা ভেবেই জীবনটা পাল্টে ফেলেছি। সাবধান, আমি কিন্তু এখনো আমার কারখানা বন্ধ করিনি!’
তবে কন্যা, নাতি-নাতনিদের জন্য ভালোবাসা প্রকাশ করলেও সাবেক স্ত্রী ক্লদিয়া ভিল্লাফেনের প্রতি বিষোদগার করতে ছাড়েননি ম্যারাডোনা। ভিল্লাফেনের বিরুদ্ধে ৯০ লাখ ডলার চুরির অভিযোগ করে তাঁকে জেলে পাঠানোর হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিলেন কিছুদিন আগে। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়া ম্যারাডোনা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, ‘ডিয়েগো কারো জীবন ধ্বংস করেনি। আমি শুধু নিজের জিনিস ফিরে পেতে পেশাদারদের সাহায্য চেয়েছিলাম। আমি কোনো ব্যাংক লুট করিনি।’ ভক্তদের ভালোবাসা জানিয়ে ভিডিওবার্তাটি শেষ করেছেন ম্যারাডোনা।