মেসির কাছে মানবতাই বড়
ইসরায়েলি সৈন্যদের গুলিতে অহরহ প্রাণ হারাচ্ছে ফিলিস্তিনি শিশুরা। আর সেই দলের বিপক্ষেই নামতে হবে লিওনেল মেসির? না, আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড আর তাঁর দল ইসরায়েলের বিপক্ষে নামতে জানিয়েছে অপরাগতা। দলনায়ক মেসি বলেছেন, খেলার চেয়ে মানবতাটাই বড় তাঁর কাছে।
জেরুজালেমের মাঠে ইসরায়েলের বিপক্ষে মাঠে নামার কথা ছিল লিওনেল মেসি ও তাঁর দল আর্জেন্টিনার। তবে ফিলিস্তিনি মেসিভক্তরা মেনে নিতে পারেনি প্রিয় খেলোয়াড়ের তাদের ‘শত্রুদলের’ বিপক্ষ মাঠে নামার ব্যাপারটি। তাই জানিয়েছিলেন প্রতিবাদ, হুমকি এসেছিল মেসিদের জার্সি ও পতাকা পোড়ানোর। আর গতকাল তো আর্জেন্টিনা দলের রক্তাক্ত জার্সি নিয়ে এসে বার্সেলোনাতেই প্রতীকী এক প্রতিবাদ করেছে ফিলিস্তিনবাসী।
শেষ পর্যন্ত তাদের ডাকে সাড়া দিয়েই আর্জেন্টাইন দলনায়ক এর আগেই সরে গেছেন সে ম্যাচে অংশ নেওয়া থেকে। আগামী শনিবার ফিলিস্তিনের রাজধানী জেরুজালেমে মাঠে গড়ানোর কথা থাকলেও সে ম্যাচ বাতিল করেছে আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশন। আর তার পেছনে মেসির ছিল সক্রিয় ভূমিকা।
শিশুদের জন্য মেসির মনে রয়েছে আলাদা একটা জায়গা। ইউনিসেফের হয়ে কাজ করেছেন পুরো বিশ্বের অসহায় শিশুদের জন্য। নিজেও এখন তিন সন্তানের জনক। তাঁর ছেলের সমবয়সীরা ফিলিস্তিনে মারা যাচ্ছে গুলির আঘাতে, বোমার আঘাতে। মেসির অন্তর তো কাঁদবেই!
আর্জেন্টাইন টিভি চ্যানেল টিওয়াইসিকে মেসি জানিয়েছেন মানবিক দিক থেকেই এই ম্যাচে অংশ নিচ্ছেন না তিনি ও তাঁর দল। পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী ফুটবলারের ভাষ্যে, ‘ইউনিসেফের এক শুভেচ্ছাদূত হিসেবে আমি সেই দলের বিপক্ষে খেলতে পারি না যারা নিরীহ ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যা করছে। আমাদের এই খেলাটা বাতিল করতে হয়েছে কারণ, সবার আগে আমরা মানুষ।’
আর্জেন্টিনা ফেডারেশন প্রায় ১.৩ মিলিয়ন ডলার পেত এ ম্যাচে মেসি আর তাঁর দল মাঠে নামলে। যেহেতু আর্জেন্টিনা নামছে না এ ম্যাচে, ফলে ফেডারেশন মুখোমুখি হলো বড় একটা ক্ষতিরই। এখানেও এগিয়ে এসেছেন দলনায়ক মেসি। ফেডারেশনকে পুরো টাকাটাই দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড।
মানবিক কারণে ম্যাচটায় অংশ না নেওয়ায় অবশ্য আর্জেন্টিনার জন্য একটু ক্ষতিই হয়ে গেল। কেননা ইসরায়েলের বিপক্ষের এই ম্যাচটাই ছিল বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে মেসিদের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচ। অবশ্য আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশন চেষ্টা করছে মাল্টা বা স্যান মেরিনো- দেশ দুটির বিপক্ষে মাঠে নেমে সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে।