কারা পেরোল গ্রুপ পর্বের বাধা
এই কয়েক দিন আগেই শুরু হয়েছিল ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর বিশ্বকাপ। বরাবরের মতো এবারও একের পর এক চমক আর বিস্ময় উপহার দিয়ে চলেছে রাশিয়া বিশ্বকাপ। আর সেই উন্মাদনায় সময়টাও গেল বড় দ্রুত। দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল গ্রুপ পর্বের লড়াই। দীর্ঘ বাছাইপর্ব পেরিয়ে যে ৩২টি দল বিশ্বকাপের মঞ্চে উঠেছিল, সেখান থেকে নেমে যেতে হলো ১৬টি দলকে।
গ্রুপ পর্বের জমজমাট লড়াই শেষে নকআউট পর্বে নাম লিখিয়েছে বাকি ১৬টি দল। এবার শুরু হবে শিরোপা জয়ের বাঁচামরার লড়াই। যেখানে প্রতিটি ম্যাচই ফাইনাল ম্যাচ। হারলেই বিদায় নিতে হবে বর্ণিল-ঝলমলে বিশ্বকাপের মঞ্চ থেকে। আর জয়ী দল এগিয়ে যাবে আকর্ষণীয় সেই লক্ষ্যটির দিকে। বিশ্বকাপের শিরোপা জয়। গ্রুপ পর্বের লড়াই শেষে দেখে নেওয়া যাক কোন ১৬টি দল গেল বাঁচামরার নকআউট পর্বে। আর শিরোপা জয়ের চূড়ান্ত লড়াইয়ে কাকে কার মুখোমুখি হতে হবে।
এ গ্রুপ থেকে দুর্দান্ত দাপট দেখিয়ে পরবর্তী রাউন্ডে পা রেখেছে লুইস সুয়ারেজের উরুগুয়ে। গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচই জিতেছে তারা। এ গ্রুপ থেকে উরুগুয়ের সঙ্গী হয়েছে স্বাগতিক রাশিয়া। তারা জয় পেয়েছে দুটি ম্যাচে।
বি গ্রুপে হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। গ্রুপ পর্বের বাধা পেরোতে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত কঠিন লড়াই চালিয়েছে স্পেন, পর্তুগাল ও ইরান। শেষপর্যন্ত পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে নকআউট পর্বে এসেছে স্পেন ও পর্তুগাল। বেশি গোল দেওয়ার হিসাবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে স্পেন। চার পয়েন্ট নিয়ে বাদ পড়তে হয়েছে ইরানকে।
সি গ্রুপে সাত পয়েন্ট নিয়ে সহজেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফ্রান্স। দ্বিতীয় স্থানের জন্য লড়াই হয়েছিল ডেনমার্ক ও পেরুর মধ্যে। কিন্তু শেষমেশ একটি জয় দিয়ে তিন পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে পেরুকে। ৫ পয়েন্ট নিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গী হয়েছে ডেনমার্ক।
ডি গ্রুপের শুরুতেই ছিল চমক। নবাগত আইসল্যান্ডের সঙ্গে ড্র করে হোঁচট খেয়েছিল ফেভারিট আর্জেন্টিনা। এরপর ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষেও হেরে যাওয়ায় নকআউট পর্বে ওঠা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছিল লিওনেল মেসিদের। তবে শেষ ম্যাচে নাইজেরিয়াকে হারিয়ে সেই শঙ্কা-সংশয় কাটিয়েছে আকাশী-সাদারা। তবে তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। তিন ম্যাচের তিনটিতেই জয় দিয়ে শীর্ষস্থান দখল করেছে ক্রোয়েশিয়া।
ই গ্রুপ থেকে আর্জেন্টিনার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে অবশ্য এত দুর্দশার মধ্যে পড়তে হয়নি। দুটি জয় ও একটিতে ড্র করে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই পরবর্তী রাউন্ডে পা রেখেছে সেলেসাওরা। তাদের সঙ্গী হয়েছে সুইজারল্যান্ড।
এফ গ্রুপে হয়ে গেছে বড়সড় একটা অঘটনের ভূমিকম্প। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে গতবারের শিরোপাজয়ী জার্মানিকে। নিজেদের শেষ ম্যাচে তারা ২-০ গোলে হেরে গেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে। এই গ্রুপ থেকে পরবর্তী রাউন্ডে গেছে সুইডেন ও মেক্সিকো। দুই দলই পেয়েছে দুটি করে জয়। তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সুইডেন।
জি গ্রুপে কোনোই অঘটনের সুযোগ দেয়নি ইংল্যান্ড ও বেলজিয়াম। টানা দুটি ম্যাচ জিতে তারা নিশ্চিত করে ফেলেছে পরবর্তী রাউন্ড। আর দুই ম্যাচ হেরেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে তিউনিসিয়া ও পানামার।
এইচ গ্রুপে হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। শেষ ম্যাচের আগেও সম্ভাবনা ছিল চার দলেরই। শেষপর্যন্ত দুই ম্যাচে জয় দিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরবর্তী রাউন্ড নিশ্চিত করেছে কলম্বিয়া। দ্বিতীয় স্থানের জন্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে জাপান ও সেনেগালের মধ্যে। দুই দলেরই পয়েন্ট ছিল চার। কিন্তু ডিসিপ্লিনারি রেকর্ড ভালো থাকায় এশিয়ার একমাত্র দল হিসেবে নকআউট পর্বে গেছে জাপান। তিন পয়েন্ট ছিল তলানিতে থাকা পোল্যান্ডের ঘরে।