আফগান স্পিনাররা কতটা বাধা হতে পারেন বাংলাদেশের জন্য
এবারের এশিয়া কাপ যেন শুরু থেকেই অন্য কিছুর আভাস দিয়ে আসছিল। এবার ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে। গত ম্যাচে পাঁচবারের এশিয়া কাপ বিজয়ী শ্রীলঙ্কাকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে আইসিসির নবীন সদস্য আফগানিস্তান। ৯১ রানে জয় পেয়ে নিজেদের এবং বাংলাদেশের সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে তাঁরা। বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ একই ভেন্যুতে আফগানদের বিপক্ষেই। আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় এ ম্যাচে কেমন করবে লাল-সবুজের দল।
অবশ্য আবুধাবির উইকেটের চরিত্র বোঝা বড় দায়। মিডিয়াম পেসার থিসারা পেরেরা যেখানে একাই পাঁচ উইকেট নিয়েছেন, সেখানে শ্রীলঙ্কাকে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন তিনজন আফগান স্পিনার—মোহাম্মদ নবি, রশিদ খান ও মুজিব-উর-রহমান। তবে পেসবান্ধব উইকেট ছিল না বললেও ভুল হবে না। কারণ, লাসিথ মালিঙ্গা একটি মাত্র উইকেট পেয়েছেন। আর পাঁচ উইকেটের তিনটিই এসেছে আফগানিস্তানের ব্যাটিং ইনিংসের শেষ ওভারে। তাই উইকেটে শেষ বল পর্যন্ত খেলে আসা আফগানিস্তান নিজেদের ২৪৯ রান পর্যন্ত নিয়ে যেতে পেরেছে বলে তাদের সফল বলা যায়। রহস্যময় এই উইকেটে আফগানিস্তানের স্পিনাররা হয়ে ওঠেন আরো রহস্যময়। শ্রীলঙ্কা মাত্র ১৫৮ রানে গুটিয়ে গেছে স্পিনারদের দাপটে। আফগান স্পিনার রশিদ খান বর্তমানে বিশ্বের সেরা বোলারদের একজন। মোহাম্মদ নবি ও মুজিবকে নিয়ে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী এক ত্রয়ী।
অন্যদিকে বাংলাদেশ দলেও রয়েছে বিশ্বমানের স্পিনার। সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহমুদউল্লাহদের সামনে যেকোনো ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে যেতে পারে নিমেষেই। তবে চোটের কারণে দলে থাকছেন না তামিম ইকবাল। এমনকি মুশফিকুর রহিমও পাঁজরের হাড়ে চোট নিয়ে মাঠে নামবেন। সাকিবের চোট সামান্য আঘাতেই গুরুতর হতে পারে। তাই লিটন দাস, মোহাম্মদ মিঠুনরা আফগান আক্রমণ সামলাতে পারবেন কি না, সে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। তবে মিঠুনকে দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচনায় ছিল তিনি ভালো স্পিন খেলতে পারেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেকে সব ধরনের বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে প্রমাণ করেছেন এই তরুণ। নিজের দিনে লিটন দাস দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়ার সামর্থ্য রাখেন। তামিমের পরিবর্তে দলে আসতে পারেন মুমিনুল হক। তিনিও ভালো স্পিন খেলেন। তাই স্পিনারদের সমীহ করে খেলতে হলেও খুব বেশি ভয় পাওয়ার কিছু নেই টাইগারদের।
আবুধাবির মাঠে গড় প্রথম ইনিংস রান ২৪৭ এবং দ্বিতীয় ইনিংস রান ২০৭। সেই হিসেবে, যারা প্রথমে ব্যাট করেছে, অধিকাংশ সময় জিতেছে তারাই। এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২৫০ রান বা তার বেশি তাড়া করে জেতার রেকর্ড মাত্র তিনটি! তাই আফগানিস্তান গত ম্যাচে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েই শ্রীলঙ্কার এশিয়া কাপ শেষ করে দিয়েছে। পরবর্তী ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা সামলে খেলতে পারবেন তো আফগান বোলারদের?