এশিয়া কাপের তিন আক্ষেপ বাংলাদেশের
ইংল্যান্ডে ক্রিকেটের জন্ম হলেও ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যেই। একইভাবে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়েও একই কারণে বিরাজ করে উত্তেজনা। সেই হিসেবে বাংলাদেশ আইসিসির সহযোগী দেশ হিসেবে এশিয়া কাপের দ্বিতীয় আসর থেকে যাত্রা শুরু করে। এশিয়ার মুকুটের লড়াইয়ে সময়ের পরিবর্তনে নিজেদের প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ। তবে এশিয়া সেরার মুকুট পরা হয়ে ওঠেনি কখনোই।
২০১২ সালে এশিয়া কাপ হয়েছিল ঢাকায়। সেই ম্যাচে ফাইনালে মুখোমুখি হয় পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২৩৬ রান করতে সমর্থ হয় পাকিস্তান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল টাইগাররা। তবে ভাগ্য সহায় ছিল না। শেষ বলে দরকার ছিল মাত্র চার রান। স্ট্রাইকে ছিলেন শাহাদাত হোসেন। আইজাজ চিমার শেষ বলে লেগ-বাইয়ের সুবাদে একটি মাত্র রান সংগ্রহ করতে পারেন তিনি। জয়ের খুব কাছে গিয়েও মাত্র দুই রানে হেরে বসে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে সাকিব-মুশফিকদের কান্নার দৃশ্য অনেকদিন তাড়িয়ে বেড়িয়েছে দর্শকদের। তবে সেই থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের উত্থানের গল্প শুরু বলা যায়।
২০১৪ সালে এশিয়া কাপে মাত্র পাঁচটি দল অংশগ্রহণ করে। তবে সেখানে শোচনীয়ভাবে চার ম্যাচের চারটিতেই হেরে পয়েন্ট টেবিলের সবার নিচে অবস্থান করেছে বাংলাদেশ। তবে ঠিক পরের এশিয়া কাপেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন টাইগাররা।
২০১৬ সালের এশিয়া কাপ হয়েছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। সেখানেও পাঁচটি দল অংশ নিয়েছিল। তবে সেবার তিনটি জয় নিয়ে ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে মাঠে নামে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে বৃষ্টির বাধায় ১৫ ওভার করে খেলেছিল উভয় দল। স্কোরবোর্ডে পাঁচ উইকেটে মাত্র ১২০ রান জমা করতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ দল। জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে সাত বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে ভারত। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেনি বাংলাদেশ।
সদ্যসমাপ্ত ১৪তম এশিয়া কাপের ফাইনালে আবারও সেই ভারত ও বাংলাদেশ। নিয়ম অনুযায়ী এবার একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিল আটট দল। গ্রুপ পর্বের পর সরাসরি সেমিফাইনাল না হয়ে সুপার ফোর ফরম্যাট দাঁড় করানো হয়েছিল। সুপার ফোরে ভারতের কাছে একেবারে নাস্তানাবুদ হয়ে হারে বাংলাদেশ। তবে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে জিতে ফাইনালে মুখোমুখি হয় টাইগাররা। প্রথমেই ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২২২ রান করতে পারে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। অথচ এই রান টপকাতেই ভারতকে শেষ বল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে, হারাতে হয়েছে সাতটি উইকেট। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল ছাড়াই তারুণ্যসমৃদ্ধ বাংলাদেশ দল ভুগিয়েছে ভারতকে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ ভারতকে আটকে রাখতে পারেননি।
গত চার এশিয়া কাপের তিনটিতেই বাংলাদেশ ফাইনাল খেলেছে। তবে হেরেছেও তিনটিতেই। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই রানের হার এবং ভারতের বিপক্ষে স্নায়ুচাপের ম্যাচে নিজেদের সামর্থ্যের পরিচয় দিয়েছে বাংলাদেশ। হয়তো এভাবেই একদিন ট্রফির আকাঙ্ক্ষা ঘুচবে বাংলাদেশের, সেই অপেক্ষায় আছেন ভক্তরা।