যে কারণে একাদশে সাদমান
মিরপুর শেরেবাংলায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচেই বাংলাদেশ দলে অভিষেক হয়েছে বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলামের। জাতীয় ক্রিকেট লিগে দারুণ পারফর্ম করে এই তরুণ ব্যাটসম্যান আলোচনায় ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। তবে শুধু ফর্মে কিংবা আলোচনায় থাকার কারণেই নয়, আরো কিছু কারণ তো রয়েছেই।
চোটের কারণে দীর্ঘদিন দলের বাইরে ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। জিম্বাবুয়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে খেলতে পারছেন না তিনি। চলমান সিরিজের প্রথম টেস্টে খেললেও চোটের কারণে ছিটকে পড়েছেন আরেক ওপেনার ইমরুল কায়েসও। তাই সৌম্য সরকারের সঙ্গে একজন ওপেনারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, নির্বাচকরা আস্থায় নেন সাদমানকেই।
অবশ্য উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম আঙুলে চোট পাওয়ার কারণে লিটন দাসকে দ্বিতীয় টেস্টে হঠাৎ দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মুস্তাফিজুর রহমানের বদলে তাঁকে একাদশেও নেওয়া হয়েছে হয়তো মুশফিকের জায়গায় উইকেটকিপিং করতে হতে পারে।
অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। রান পেয়েছিলেন সাম্প্রতিক সময়ের জাতীয় ক্রিকেট লিগেও (এনসিএল)। অবশ্য ইন্ডিজের বিপক্ষে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো পারফর্ম করে টেস্ট দলে জায়গা করে নিয়েছেন সাদমান। দুদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ শেষে ১৩ জনের দলে হঠাৎ করেই সাদমানকে অন্তর্ভুক্ত করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। শেষ দিনে ব্যাটিংয়ে নেমে সৌম্য সরকারের সঙ্গে সাদমান গড়েছিলেন ১২৬ রানের জুটি। পরে ৭৩ রানের মাথায় রানআউট হলেও দুই সেশন মাঠে ছিলেন তিনি। ইনিংসটিও সাজিয়েছেন ১০টি চার ও একটি ছক্কার মারে। কেমার রোচ, দেবেন্দ্র বিশুদের খেলে নজরে এসেছেন এই তরুণ।
এনসিএলেও উজ্জ্বল ছিলেন সাদমান। এবারের টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনিই—৬৪৮ রান করেছেন ১০ ইনিংসে। দুইয়ে থাকা তুষার ইমরানের চেয়েও ১৩০ রান বেশি করেছেন এই তরুণ ব্যাটসম্যান। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই নিজেকে ছাড়িয়ে ১৫৭ রানের সর্বোচ্চ গড়া সাদমান পরের ম্যাচে ১৮৯ করে নিজেকে আরো এগিয়ে নিয়েছিলেন।
দীর্ঘদিন বয়সভিত্তিক দলে খেলেছেন সাদমান। ২০১৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ১০১.৫০ গড়ে ৪০৬ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। সেই তালিকায় দুইয়ে ও তিনে থাকা ইমাম-উল-হক ও এইডেন মার্করাম কিছুদিন ধরেই যথাক্রমে পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার নিয়মিত মুখ। এমনকি বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে গত বছরের অক্টোবরে সিলেটে আয়ারল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষেও শতক পেয়েছিলেন তিনি। হাইপারফরম্যান্স স্কোয়াডের নিয়মিত মুখ সাদমান প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সংগ্রহ করেছেন ৩,০২৩ রান। ৪২ ম্যাচে তাঁর গড় ৪৬.৫০, যেখানে তিনি শতক পেয়েছেন সাতটি।
জাতীয় ক্রিকেট লিগের মতো এখানেও জ্বলে উঠতে পারেন কি না সাদমান, সেটিই এখন দেখার বিষয়।