এখনো স্বপ্নের ঘোরে আছেন তামিম ইকবাল
ক্যারিয়ারে প্রথমবার বিপিএল ফাইনাল খেললেন তামিম ইকবাল। আর প্রথম ফাইনালে নেমেই এমন এক ইনিংস খেলেছেন, যা নিয়ে আলোচনা হবে আগামী অনেক বছর। মাত্র ৬১ বলে তাঁর অপরাজিত ১৪১ রানের ইনিংসটাকে অবিস্মরণীয়, মনোমুগ্ধকর বা অন্য যেকোনো অভিধায় অভিহিত করা যাবে। তবে ম্যাচশেষে তামিম জানালেন, তিনি এখনো যেন স্বপ্নের ঘোরে আছেন।
তামিমের ইনিংসটার মাহাত্ম্য বোঝাতে কিছু পরিসংখ্যান দেওয়া যাক। ফাইনালে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামা কুমিল্লার মোট রানের ৭০.৮৫ শতাংশই এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। ভিক্টোরিয়ানদের ১৯৯ রানের ইনিংসে তামিম বাদে বাকি ব্যাটসম্যানদের অবদান ৫৯ বলে মাত্র ৪৭ রান। ম্যাচসেরা তামিম বলেছেন, ‘সত্যি বলতে কি মনে হচ্ছে আমি এখনো স্বপ্নের মধ্যে আছি। জানি না কীভাবে এমন ব্যাটিং করে ফেললাম। ইনিংসটার হাইলাইটস দেখার পর হয়তো সবকিছু ব্যাখ্যা করতে পারব।’
তবে স্বপ্নের কথা বললেও বাস্তবে মাঠে নেমে দারুণ হিসাবি ব্যাটিং করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। কোন বোলারকে মারবেন, আর কাকে ছেড়ে খেলবেন সেটা নিয়ে ভালো পরিকল্পনা ছিল তাঁর। তবে এমন এক বিস্ময়কর ইনিংস খেলবেন সেটা চিন্তায় ছিল না জানিয়ে তামিম বলেছেন, ‘পরিকল্পনা থাকলেও এমন ইনিংস খেলে ফেলব, সেটা ভাবিনি। চেয়েছিলাম সাকিব ও সুনীল নারিনের বলে উইকেট না দিতে। তাই ওদের বিরুদ্ধে কিছুটা রয়েসয়ে খেলেছি। উইকেটটা যথেষ্ট ভালো ছিল বলে পেসারদের বিরুদ্ধে ইচ্ছেমতো মেরে পুষিয়ে নিয়েছি।’
টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে ব্যাট হাতে প্রত্যাশিত সাফল্য না পেলেও আত্মবিশ্বাস হারাননি তামিম। অবিশ্বাস্য এই ইনিংসের জন্য কৃতিত্ব দিয়েছেন কোন অবস্থাতেই আত্মবিশ্বাস না হারানোর মন্ত্র বুনে দেওয়া মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। ‘একপর্যায়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন হলেও সবসময় ইতিবাচক মানসিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। ফ্র্যাঞ্চাইজির স্বত্বাধিকারীদের এক মিনিটের জন্যও বুঝতে দেইনি যে আমরা হারতে পারি বা হেরে যাব। এই ইতিবাচক মানসিকতা ধরে রাখার কৃতিত্বটা মাশরাফি ভাইকে দিতে চাই।’
দারুণ সব ক্রিকেটীয় শটে সাজিয়েছেন নিজের ইনিংসটাকে। তবে ২৩১.১৪ স্ট্রাইক রেটটা টি-টোয়েন্টি মারকাটারি ব্যাটিংকেও যেন হার মানায়। তবে এসবের চেয়ে তামিমকে বেশি আনন্দ দিচ্ছে বাংলাদেশি খেলোয়াড় হয়েও বড় মঞ্চে অবিশ্বাস্য সাফল্য এনে দিতে পেরে। গর্বের সাথে বলেছেন, ‘সাধারণত এমন বড় কোনো ম্যাচে আগে বিদেশি খেলোয়াড়রা সাফল্য এনে দিয়েছিল। একজন বাংলাদেশি হিসেবে এবার সেই কাজটা করতে পেরে সবচেয়ে ভালো লাগছে। আমি মনে করি, এই ইনিংসটা আগামী দিনে আমাদের দেশি ক্রিকেটারদের বড় কিছু করার উৎসাহ জোগাবে।’