আর্জেন্টিনা হতাশ, ব্রাজিল সন্তুষ্ট
ঘরের মাঠে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের বিপক্ষে প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়েছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি স্বাগতিকরা। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ১-১ গোলে ড্র করে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে দুই প্রতিবেশী দেশ। এমনিতে ‘শিষ্য’দের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট হলেও প্রথমে গোল করেও জিততে না পেরে বেশ হতাশ আর্জেন্টিনার কোচ জেরার্দো মার্তিনো।
আক্রমণভাগের তিন প্রধান তারকা লিওনেল মেসি, সার্জিও আগুয়েরো ও কার্লোস তেভেজকে ছাড়াই মাঠে নামতে হয়েছিল আর্জেন্টিনাকে। তারপরও প্রথমার্ধে ব্রাজিলকে ভালোই চাপে রেখেছিলেন হিগুয়াইন-লাভেজ্জি-দি মারিয়ারা। কিন্তু ফলাফলের হিসাবে সেই প্রাধ্যান্যের কোনো মূল্য নেই বলেই মনে করছেন মার্টিনো। ম্যাচ শেষে কিছুটা আক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘ম্যাচে আমরা ইতিবাচক পারফরম্যান্স দেখিয়েছি। কিন্তু পয়েন্টের হিসেব করতে বসলে ইতিবাচক দিক খুঁজে পাওয়া যাবে না। ব্রাজিল বেশ কার্যকর ফুটবল খেলেছে। আমরা সেটা পারিনি। কলম্বিয়ার বিপক্ষে পরবর্তী ম্যাচটা আমাদের জিততেই হবে।’
আগামী মঙ্গলবার রাতে কলম্বিয়া সফরে জিততে না পারলে আর্জেন্টিনা আরো পিছিয়ে পড়বে। ১০ দলের লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে তিন ম্যাচ দুই পয়েন্ট নিয়ে দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের অবস্থান নবম। সমান ম্যাচে চার পয়েন্ট সংগ্রহ করলেও শ্রেয়তর গোলগড় ব্রাজিলকে রেখেছে চতুর্থ স্থানে।
ব্রাজিলের বিপক্ষে মেসির অনুপস্থিতিতে আর্জেন্টিনার অধিনায়কত্ব করেছেন হাভিয়ের মাসচেরানো। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে বাগে পেয়েও হারাতে না পেরে এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হতাশ, ‘আমরা কোনো রকম অজুহাত দাঁড় করাতে চাই না। ম্যাচটা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে একটা ঝটিকা আক্রমণ থেকে গোল করে তারা ম্যাচটা ড্র করেছে।’
হতাশায় মোড়ানো আর্জেন্টিনা শিবিরের বিপরীত অবস্থা ব্রাজিল দলে। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে খেলোয়াড়দের লড়াকু পারফরম্যান্স নিয়ে সন্তুষ্ট ব্রাজিলের কোচ দুঙ্গা। অবশ্য ঘরের মাঠে স্নায়ুচাপে ভোগা আর্জেন্টিনাকে হারানোর সুযোগ হাতছাড়া করে তিনি কিছুটা হতাশও, ‘আপনারা খেয়াল করেছেন কিনা জানি না। কিন্তু এটা কোনো আর্জেন্টাইন স্টেডিয়াম বলে মনে হচ্ছিল না। দর্শকরা দুশ্চিন্তায় ছিল। গ্যালারিতে ছিল শান্ত ভাব। প্রথমার্ধে আমরা এর ফায়দা নিতে পারিনি। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা কৌশলগতভাবে দুর্দান্ত ছিলাম। দৃঢ়তা আর লড়াই বিচার করা হলে আমরাই অপেক্ষাকৃত ভালো খেলেছি। আর্জেন্টিনার মাটি থেকে এক পয়েন্ট নিয়ে যাওয়াকে ভালোই বলতে হবে।’
কোপা আমেরিকায় অখেলোয়াড়সুলভ আচরণের কারণে চার ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন নেইমার। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এই ম্যাচেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরেছেন তিনি। তবে ইদানীং বার্সেলোনার জার্সি গায়ে সপ্রতিভ নেইমারকে বুয়েনস আইরেসের মাঠে খুঁজে পাওয়া যায়নি। দুঙ্গা অবশ্য দলের সবচেয়ে বড় তারকার পারফরম্যান্স নিয়ে অসন্তুষ্ট নন, ‘নেইমার দলের জন্য খেলেছে। বার্সেলোনায় আমরা তাকে যেভাবে খেলতে দেখি সেভাবে হয়তো সে জ্বলে উঠতে পারেনি। তার অন্যতম কারণ আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডারদের কড়া মার্কিং। আমরা প্রতি দুই মাস পর-পর খেলি। জাতীয় দলের সঙ্গে খেলোয়াড়রা মাত্র এক/দুই দিন প্র্যাকটিস করার সুযোগ পায়। সেজন্যই বোধহয় নেইমারের সতীর্থদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে একটু সমস্যা হয়েছে। তবে আমি নিশ্চিত, পরের ম্যাচে সে অনেক ভালো খেলবে।’
বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে ঘরের মাঠে পেরুর মুখোমুখি হবে ব্রাজিল।