ফ্রান্স-জার্মানি ম্যাচেও বোমাতঙ্ক
ফ্রান্স-জার্মানি প্রীতি ম্যাচ উপভোগ করতে ফ্রান্সের জাতীয় স্টেডিয়াম স্তাদ দি ফ্রান্সে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রায় ৮০ হাজার ফুটবলভক্ত। জমজমাট লড়াই দেখার প্রত্যাশা নিয়ে তাঁরা বসেছিলেন গ্যালারিতে। কিন্তু খেলা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই পাল্টে যেতে থাকে দৃশ্যপট। প্রথমার্ধের খেলা চলার সময় স্টেডিয়ামের বাইরে তিনটি বোমা বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে গ্যালারিতে। ম্যাচটা কোনো গোলমাল ছাড়া শেষ হলেও দর্শকরা খেলা তেমন উপভোগ করতে পারেনি।
নিজেদের মাঠে বিশ্বকাপজয়ী জার্মানির বিপক্ষে ২-০ গোলে জয়ের পর উল্লাস করতে করতে বাড়ি ফেরার কথা ছিল ফরাসীদের। কিন্তু আনন্দ দূরে থাক, ভয়ে-আতঙ্কে কুঁকড়ে কোনো রকমে স্টেডিয়াম ছেড়েছেন তাঁরা।
শুক্রবার রাতে প্যারিসে প্রায় একই সময়ে ছয়টি স্থানে সিরিজ বোমা হামলা ও বন্দুকধারীদের গুলিতে কমপক্ষে দেড়শ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে।
স্তাদ দি ফ্রান্সের বাইরে বোমা বিস্ফোরণকে শুরুতে আতশবাজির শব্দ বলে মনে করেছিলেন অনেকে। কিন্তু সেই সময় প্যারিসে যে নারকীয় পরিস্থিতির জন্ম হয়েছিল তার খবর দ্রুতই আসতে শুরু করে গ্যালারিতে। স্টেডিয়ামের খুব কাছেই তিনটি বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন তিনজন। ১১ জন গুরুতর আহত হন। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে খেলা চালিয়ে যাওয়ার নিন্দা জানিয়ে এএফপির এক সাংবাদিক বলেন, ‘খেলা চলছেই। যদিও এটা খুব বীভৎস ব্যাপার। সত্যি বলছি, আমি খুব ভয় পেয়েছি।’
ম্যাচটা দেখতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদ। বিস্ফোরণের পরপরই তাঁকে মাঠ থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় নিরাপত্তারক্ষীরা। দ্বিতীয়ার্ধে মাঠের ওপর নিচু হয়ে চক্কর দিতে থাকে কয়েকটি হেলিকপ্টার। স্টেডিয়ামের বাইরে থেকে একটানা ভেসে আসতে থাকে সাইরেনের শব্দ।
খেলা শেষ হওয়ার পর সঙ্গে-সঙ্গে স্টেডিয়াম ছাড়তে পারেননি কয়েক হাজার দর্শক। ভয়ে-আতঙ্কে একসময় মাঠে ঢুকে পড়েন তাঁরা। ধীরে-ধীরে সবাইকে স্টেডিয়াম থেকে বের করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। ততক্ষণে পেরিয়ে গেছে মধ্যরাত। ম্যাচ শেষে টেলিভিশনের দিকে তাকিয়ে স্তম্ভিত হয়ে গেছেন ফুটবলাররাও।