অ্যাথলেটিকসে মাদক কেলেঙ্কারির বছর
বিশ্ব অ্যাথলেটিকসে ২০১৫ সাল স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারত উসাইন বোল্টের কীর্তির কারণে। বেইজিংয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপের তিনটি ইভেন্টে অংশ নিয়ে তিনটিতেই সোনা জিতেছেন বিশ্বের দ্রুততম মানব। কিন্তু এ বছর অ্যাথলেটিকস অঙ্গন বেশি সরগরম ছিল দুর্নীতি ও অনিয়ম-সংক্রান্ত কেলেঙ্কারির কারণে। ডোপিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে বহিষ্কৃত হয়েছে রুশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন।
২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিক দিয়ে অ্যাথলেটিকস বিশ্বের নতুন তারকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন বোল্ট। এ বছর সেই বেইজিংয়েই অনুষ্ঠিত বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে আরো একবার আলো ছড়িয়েছেন দীর্ঘদেহী এই জ্যামাইকান অ্যাথলেট। ২০০৮ ও ২০১২ সালের অলিম্পিক এবং ২০০৯ ও ২০১৩ সালের অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপের মতো বেইজিংয়েও জিতেছেন তিনটি ইভেন্টের সোনা। বোল্টই প্রথমবারের মতো পাঁচটি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় সোনার ট্রেবল জয়ের বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেছেন।
তবে বোল্টের এই কীর্তি ছাপিয়ে ২০১৫ সালে বেশি আলোচিত হয়েছে আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিকস অ্যাসোসিয়েশনের আর্থিক ও মাদক-সংক্রান্ত দুর্নীতির খবর। গত আগস্টে অ্যাথলেটিকস অ্যাসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক ইংলিশ অ্যাথলেট সেবাস্টিয়ান কো। সভাপতির আসনে বসার পরপরই তিনি দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন সাবেক সভাপতি লামাইন ডায়াকের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, অবৈধভাবে অর্থ গ্রহণের বিনিময়ে রুশ অ্যাথলেটদের ডোপ কেলেঙ্কারির ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছিলেন ডায়াক। যে অভিযোগ নিয়ে ফরাসি কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে এখন। আলাদাভাবে স্বাধীন একটি কমিশন গঠন করে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব মাদকবিরোধী সংস্থাও (ওয়াডা)।
বিশাল আকারে ডোপিং কেলেঙ্কারিতে জড়ানোর কারণে নভেম্বরে রুশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিকস অ্যাসোসিয়েশন। রাষ্ট্রীয় মদদে দীর্ঘদিন ধরে রুশ অ্যাথলেটরা অবৈধ মাদক গ্রহণ করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছিল ওয়াডা। একই অভিযোগ উঠেছে কেনিয়ার বিরুদ্ধেও। আইএএএফ-এর নৈতিকতাবিষয়ক কমিটি নিষিদ্ধ করেছে কেনিয়ার অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের প্রধান ইসাইয়া কিপলাগাত, সহসভাপতি ডেভিড ওকেয়ো ও সাবেক কোষাধ্যক্ষ জোসেফ কিনুয়াকে।
২০১৫ সাল তাই কলঙ্কের বছর হিসেবেই বিস্মরণীয় হয়ে থাকবে অ্যাথলেটিকস-ইতিহাসে।