ইউরো কাপের শুরুতে অনেক দুশ্চিন্তা
বিশ্বকাপের পর ফুটবলের দ্বিতীয় সেরা ফুটবল প্রতিযোগিতা হিসেবে ধরা হয় ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ বা ইউরোকে। এবার প্রথমবারের মতো ২৪টি দল অংশ নিচ্ছে বলে ইউরোর আকর্ষণ বহুগুণ বেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ফ্রান্সে মাঠের লড়াইয়ের আগ্রহকে ছাপিয়ে যাচ্ছে মাঠের বাইরের ‘লড়াই’ নিয়ে আশঙ্কা। গত নভেম্বরে প্যারিসে জঙ্গি হামলায় ১৩০ জনের মৃত্যুর দুঃসহ স্মৃতি আজও যেন তাড়া করে ফিরছে ফরাসিদের। সেই স্মৃতি আর শঙ্কা মাথায় নিয়ে আজ রাতে প্যারিসের স্তাদে দে ফ্রান্সে স্বাগতিকদের সঙ্গে রোমানিয়ার উদ্বোধনী ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠছে ইউরোর।
শুধু নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কাই নয়, আছে অন্যান্য অস্বস্তিও। আবর্জনা পরিষ্কারে নিয়োজিত কর্মচারীদের ধর্মঘটে ফ্রান্সের জনজীবন বিপর্যস্ত। ইউরোপের অন্যতম সমৃদ্ধশালী দেশটির রাস্তাঘাটে স্তূপ হয়ে পড়ে থাকা আবর্জনা এখন স্বাভাবিক দৃশ্য। প্যারিসে প্রায় তিন হাজার টন আবর্জনা পড়ে আছে রাস্তায়। শুধু তাই নয়, আবর্জনা ভস্মাধারগুলোও ঘিরে রেখেছে বহু কর্মচারী ও ট্রাকচালক। অবস্থা বেগতিক দেখে ধর্মঘট প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন ফ্রান্সের পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রী সেগোলেন রয়্যাল। প্যারিস যে ২০২৪ অলিম্পিক আয়োজনের অন্যতম দাবিদার, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘একটা আধুনিক দেশের জন্য এত দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা কোনো কাজের কথা নয়। ফ্রান্সের গর্ব আজ বিপন্ন হওয়ার পথে।’
সমস্যা গুরুতর হতে পারে আরো। ট্রেনচালক আর এয়ার ফ্রান্সের পাইলটরাও ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছেন। পাইলটদের চারদিনের ধর্মঘট শুরু হতে পারে আগামীকাল শনিবার থেকে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ অবশ্য যে কোনো মূল্যে সমস্যার সমাধান করতে প্রত্যয়ী, ‘সব কিছু গভীর মনোযোগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হলে তা নেওয়া হবে। আমরা জনসেবা প্রদানে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। পুরো ইউরোপ এখন আমাদের দিকে তাকিয়ে।’
তবে সবকিছু ছাপিয়ে নিরাপত্তাই গুরুত্ব পাচ্ছে সবচেয়ে বেশি। খেলোয়াড় ও দর্শকের জন্য মাসব্যাপী এই প্রতিযোগিতায় প্রায় ৯০ হাজার পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষী নিয়োজিত থাকবেন। বোঝাই যাচ্ছে, সাত মাস আগের ভয়াবহতার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ফ্রান্স। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যর হুঁশিয়ারি, ইউরো চলার সময় আবার ফ্রান্সে হামলা চালাতে পারে সন্ত্রাসীরা। ইউরোর আয়োজকরা তাই কোনোরকম ঝুঁকি নিতে রাজি নয়।