ফুটবল ঐক্যবদ্ধ করেছে যে দেশকে
ফুটবলে আইসল্যান্ডের তেমন সাফল্য নেই। ইউরোপীয় ফুটবলে বরং বেশ পিছিয়েই ছিল এই দ্বীপরাষ্ট্র। বিশ্বকাপে কখনো খেলার সুযোগ হয়নি। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও এবার প্রথম অংশ নিচ্ছে। আর প্রথমবারেই উপহার দিয়েছে বিস্ময়। গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে পৌঁছে গেছে শেষ ষোলোতে। ফুটবলারদের সাফল্যে আইসল্যান্ডিকরা আনন্দে আত্মহারা। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে আরেকটি বিস্ময় উপহার দিতে চাইছে তারা।
‘এফ’ গ্রুপে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় হয়েছে আইসল্যান্ড। তিন ম্যাচের একটিতেও হারেনি। পর্তুগাল আর হাঙ্গেরির সঙ্গে ড্র করার পর শেষ ম্যাচে হারিয়ে দিয়েছে অস্ট্রিয়াকে।
আইসল্যান্ডের জনসংখ্যা প্রায় তিন লাখ ৩০ হাজার। এদের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশই প্রিয় দলকে সশরীরে সমর্থন জানাতে হাজির হয়েছেন ফ্রান্সে। যারা দেশে আছেন, তাদেরও ফ্রান্সে মন পড়ে আছে। আইসল্যান্ডের খেলা চলার সময় রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। রাজধানী রেকইয়াভিকের বাসিন্দা ইঙ্গা স্টেফান্সডটির আইসল্যান্ডের তিনটি ম্যাচই পরিবারের সদস্য ও কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে বাসায় দেখেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি জানিয়েছেন, ‘ম্যাচের দিন লোকে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে আসে। এমনকি স্কুলগুলোও বাবা-মাকে জানিয়ে দেয় আগেভাগে বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য। খেলা চলার সময় রাস্তায় একটা প্রাণীও চোখে পড়ে না। মনে হয় যেন আইসল্যান্ডে ধর্মঘট চলছে। প্রত্যেকে টিভিতে খেলা দেখে।’
কয়েক বছর আগে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়েছিল আইসল্যান্ডেও। দুঃসময় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা দেশটিতে উৎসবের উপলক্ষ এনে দিয়েছে ফুটবল। ইঙ্গা স্টেফান্সডটিরের বিশ্বাস, বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার কারণে দেশের মানুষের মধ্যে আজ আগের চেয়ে অনেক বেশি ঐক্য, ‘ফুটবল আমাদের জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। আইসল্যান্ডিকরা এখন একটা বিশাল পরিবারের মতো।’