স্বরূপে মেসিকে দেখার প্রত্যাশায় বার্সা কোচ
মাসখানেক টালমাটাল সময়ের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে লিওনেল মেসিকে। কোপা আমেরিকার ফাইনালে আরেকটি হারের যন্ত্রণায় বিদ্ধ আর্জেন্টিনার ‘খুদে জাদুকর’ করফাঁকির মামলায় কারাদণ্ড পর্যন্ত পেয়েছেন। অবশ্য প্রথমবার অপরাধ করায় জেলে যেতে হচ্ছে না বার্সেলোনা তারকাকে। কিন্তু মেসির মানসিক অবস্থা যে এখন ভালো নেই, তা সহজেই অনুমেয়। লুইস এনরিকেও তা ভালো বুঝতে পারছেন। তবে বার্সেলোনা কোচের দৃঢ় বিশ্বাস, কঠিন সময়কে পেছনে ফেলে উজ্জীবিত হয়েই আসন্ন মৌসুমের জন্য দলে যোগ দেবেন মেসি।
কোপা আমেরিকা শতবার্ষিকীর ফাইনালে টাইব্রেকারে গোল করতে পারেননি মেসি। চিলির কাছে হেরে যাওয়ার পর অভিমানে জাতীয় দলকে বিদায় বলে দিয়েছেন পাঁচবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার। মেসিকে ফেরাতে ভক্তরা অনুরোধ আর আকুতির জোয়ার বইয়ে দিলেও তিনি এখনো নিশ্চুপ।
শুধু সাধারণ ভক্তরা নন, এনরিকেও মেসিকে আবার বিখ্যাত আকাশি-সাদা জার্সিতে দেখতে আগ্রহী। যদিও এ প্রসঙ্গে একটা ‘কিন্তু’ রেখেছেন বার্সা কোচ, ‘কঠিন সময়েই সে (অবসরের) কথা বলেছিল। শুধু সময়ই বলে দেবে সে আর্জেন্টিনার হয়ে খেলা চালিয়ে যাবে নাকি যাবে না। ভক্ত হিসেবে আমি অবশ্যই চাই, সে আর্জেন্টিনার হয়ে খেলা চালিয়ে যাক। তবে স্বার্থপর দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে হলে যেকোনো সম্ভাবনাই দেখতে পাচ্ছি।’
‘স্বার্থপর দৃষ্টিকোণ’ বলতে হয়তো বার্সেলোনা কোচের ভূমিকার কথা বলতে চেয়েছেন এনরিকে। মেসি আর জাতীয় দলে না খেললে ক্লাবকে অনেক বেশি সময় দিতে পারবেন। আর তাহলে তো এনরিকেরই লাভ!
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো শেষ পর্যন্ত জাতীয় দলের জার্সিতে সাফল্য পেয়েছেন, জিতে নিয়েছেন ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা। কিন্তু আর্জেন্টিনার জার্সিতে মেসি সত্যিই দুর্ভাগা। ২০১৪ বিশ্বকাপ, ২০১৫ কোপা আমেরিকার পর গত মাসে বিশেষ কোপা আমেরিকার ফাইনালে হেরে ‘হতাশার হ্যাটট্রিক’ পূর্ণ করেছেন তিনি।
ফাইনালে হেরে যাওয়ার পর মেসিকে কাঁদতে দেখে দুঃখ পেয়েছেন এনরিকেও। প্রিয় শিষ্যকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টাও করছেন তিনি, ‘কোপা আমেরিকার শিরোপা তাঁর প্রাপ্য ছিল। কিন্তু ফুটবলে কখনো কখনো ভালো খেলা দল জিততে পারে না।’ আর করফাঁকির মামলায় শাস্তি সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, ‘আমার মনে হয় না, এটা লিওর ওপরে কোনো প্রভাব ফেলবে। যদিও একমাত্র সে নিজেই এর যোগ্য জবাব দিতে পারে।’
তবে গত একটি মাস যতই খারাপ কাটুক, মেসি মেসির মতোই মাঠে ফিরবেন বলে এনরিকের বিশ্বাস, ‘মেসি আগের মতো পূর্ণোদ্যমেই বার্সেলোনায় ফিরবে। কারণ সে সবচেয়ে যা ভালোবাসে, তার নাম ফুটবল।’
বার্সেলোনা কোচের মতো মেসি-ভক্তরাও সেই প্রত্যাশা নিয়ে দিন গুনছেন।