পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্তানের ইতিহাস
আন্ডারডগ হিসেবে বিশ্বকাপে শুরুটা হয়েছিল আফগানিস্তানের। প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ ও ভারতের কাছে হারলেও মনোবল হারায়নি আফগানরা। দিল্লিতে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে আফগানদের চমকের শুরু। এবার সেই প্রেরণা কাজে লাগিয়ে প্রতিবেশী পাকিস্তানকে হারিয়ে নতুন ইতিহাস গড়ল রশিদ-নবীরা।
গতকাল সোমবার (২৩ অক্টোবর) চেন্নাইয়ের এম চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে সাত উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৮২ রান তোলে আফগানিস্তান। জবাবে ৪৯ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় আফগানিস্তান। আফগানদের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৭ রান করেন ইব্রাহিম জাদরান।
২৮৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানের ব্যাটে দারুণ শুরু করে আফগানিস্তান। এই দুই ব্যাটার গড়েন ১৩০ রানের জুটি। দলীয় ১৩০ রানে হাসান আলীর বলে উইকেটের পেছনে রিজওয়ানে হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন গুরবাজ। আউটের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৫৩ বলে ৬৫ রান।
এরপর রহমত শাহকে নিয়ে ফের জুটি গড়েন জাদরান। এই জুটিতে আসে আরও ৬০ রান। দলীয় ১৯০ রানে জাদরানের বিদায়ে দ্বিতীয় উইকেট হারায় আফগানিস্তান। ১১৩ বলে ৮৭ করে আউট হন ডানহাতি এই ব্যাটার। এরপর আর কোনো উইকেট হারায়নি আফগানরা। হাশমতউল্লাহ শাহিদী ও রহমত শাহ মিলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। রহমত ৭৭ ও শাহিদী ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে দারুণ করলেও শেষ দুই ম্যাচে ব্যাটাররা সেই অর্থে ছন্দে ছিলেন না। আফগানিস্তানের বিপক্ষে অবশ্য তেমনটা হয়নি। দুই ওপেনার ইমাম-উল-হক ও আবদুল্লাহ শফিক মিলেন গড়েন ৫৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপর দলীয় ৫৬ রানে আজমতউল্লাহ ওমরজাই এর বলে নবীনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ইমাম। আউটের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২২ বলে ১৭ রান।
ইমামের বিদায়ের পর অধিনায়ক বাবরকে নিয়ে জুটি গড়েন শফিক। এই জুটিতে আসে আরও ৫৪ রান। দলীয় ১১০ রানে সাজঘরে ফেরেন আরেক ওপেনার শফিক। ৭৫ বলে ৫৮ রান আসে তার ব্যাট থেকে। শফিকের বিদায়ের পর ক্রিজে এসে থিতু হতে পারেননি অভিজ্ঞ ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। দলীয় ১২০ রানের মাথায় নূর আহমেদের বলে রশিদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ১০ বলে আট রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
রিজওয়ানের বিদায়ের পর সৌদ শাকিলকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন বাবর। তবে, দলীয় ১৬৩ রানে রশিদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটারও। ৩৪ বলে ২৫ রানের বেশি করতে পারেনিনি তিনি। এরপর শাদাব খানকে নিয়ে জুটি গড়েন বাবর। যদিও দলীয় ২০৬ রানে নূরের বলে তুলে মারতে গিয়ে নবীর হাতে ধরা পড়েন তিনি। আউটের আগে করেন ৯২ বলে ৭৪ রান। বাবরের বিদায়ের পর শাদাব ও ইফতিখারের ব্যাটে এগিয়ে যায় পাকিস্তান। শেষমেশ সাত উইকেট হারিয়ে ২৮২ রানে থামে পাকিস্তান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পাকিস্তান : ৫০ ওভারে ২৮২/৭ (শফিক ৫৮, ইমাম ১৭, বাবর ৭৪, রিজওয়ান ৮, শাকিল ২৫, শাদাব ৪০, ইফতিখার ৪০, আফ্রিদি ৩ ; নবীন ৭-০-৫২-২, মুজিব ৮-০-৫৫-০, নবী ১০-০-৩১-০, ওমরজাই ৫-০-৫০-১, রশিদ ১০-০-৪১-০, নূর ১০-০-৪৯-৩)
আফগানিস্তান : ৪৯ ওভারে ২৮৬/২ (গুরবাজ ৬৫, জাদরান ৮৭, রহমত ৭৭, শাহিদী ৪৮; আফ্রিদি ১০-০-৫৮-১, হাসান ১০-১-৪৪-১, হাসান ৮-১-৫৩-০, উসামা ৮-০-৫৫-০, শাদাব ৮-০-৪৯-০, ইফতিখার ৫-০-২৭-০)
ফলাফল : আফগানিস্তান আট উইকেটে জয়ী।