বাংলাদেশ ক্রিকেট থেকে শেষ হলো চন্ডিকা হাথুরুসিংহে অধ্যায়। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নিয়ে এবারও তার বিদায়টা সুখকর হয়নি। প্রথম মেয়াদে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ছিল দায়িত্বে। পরে পদত্যাগ করেন তিনি। দ্বিতীয় মেয়াদে তাকে করা হলো বরখাস্ত। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নানা বিতর্ক দানা বাধে তাকে ঘিরে। ফলে, দুই বছরের মেয়াদ পূর্ণ করার আগেই চাকরি হারাতে হয় হাথুরুসিংহেকে। 

আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুকে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ।

দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিয়ে শুরুটা অবশ্য দারুণ করেছিলেন হাথুরুসিংহে। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডকে প্রথমবার টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। এরপর আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানকে সিরিজ হারায়। তবে, বছরের মাঝামাঝি এশিয়া কাপে গিয়ে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। চূড়ান্ত ব্যর্থতা ও হতাশা আসে ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে।

বছরের শেষ দিকে হওয়া সেই আসরে ভরাডুবি হয় বাংলাদেশের। বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচে মাত্র দুটিতে জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। শুধু টেস্টেই নয়, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতেও কিউইদের বিপক্ষে জয় তুলে নেন শান্ত-শরিফুলরা।

চলতি বছর টেস্টে পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ২-০ ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ। প্রথমবার হোয়াইটওয়াশ করে দলটিকে। পরের সিরিজেই অবশ্য টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ভারতের কাছে লজ্জা পায় বাংলাদেশ। দুটি সিরিজেই হয় হোয়াইটওয়াশ। গড়তে পারেনি ন্যূনতম ব্যবধান। এর আগে এ বছর অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল গড়পড়তা।

দ্বিতীয় মেয়াদে সবমিলিয়ে হাথুরুসিংহের অধীনে বাংলাদেশ তিন ফরম্যাট মিলিয়ে খেলেছে ৭৭টি। টেস্টে ১০ ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে পাঁচটিতে। একটি ড্র ও হার চারটি। ওয়ানডেতে ৩৫ ম্যাচে ১৩ জয়ের বিপরীতে পরাজয় ১৯ ম্যাচে। পরিত্যক্ত হয় তিন ম্যাচ। টি-টোয়েন্টিতে ৩২ ম্যাচে খেলে জিতেছে ১৭টি, হার ১৪ ম্যাচে, পরিত্যক্ত একটি।

পরিসংখ্যানের বিচারে বাংলাদেশের এমন পারফরম্যান্স একেবারে মন্দ নয়। তবে, বড় টুর্নামেন্টে ব্যর্থতা (দুটি বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপ) এবং দলে শৃঙ্খলা আনতে না পারাই কাল হলো হাথুরুসিংহের জন্য। আর সর্বশেষ ভারত সফরের লজ্জা তো আছেই।