মিরপুরে সাকিবিয়ানদের ধাওয়া, ভিডিও করলেন অতিথি ক্রিকেটাররা
‘তুমি কে আমি কে, সাকিবিয়ান সাকিবিয়ান। মিরপুর না কানপুর, মিরপুর মিরপুর!’ –এমন সব স্লোগানে মুখোরিত হয়ে ওঠে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের এক নম্বর ফটক। আচমকাই কিছু লোক এসে এই স্লোগানের মাঝে লাঠি-বাঁশ নিয়ে ধাওয়া করে। মুহূর্তের মধ্যে বেধে যায় হট্টগোল। দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় সৃষ্টি হয় আতঙ্কের। আজ রোববার (২০ অক্টোবর) মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সামনের চিত্র এটি।
অথচ ঠিক সেই সময়ে স্টেডিয়ামের ভেতরে অনুশীলন করছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ভেতরে অতিথি দলের অনুশীলন, বাইরে মিছিল। এমন পরিস্থিতির মাঝেই অফিসিয়াল সংবাদ সম্মেলন ও অনুশীলন শেষে মিরপুর ছাড়ে অতিথিরা।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ দুপুর ২টার দিকে এক নম্বর গেটের সামনে হাজির হয় সাকিব ভক্তরা। তারা গতকাল বিসিবিকে চার দফা দাবি দিয়েছিল। বিসিবি তাতে সাড়া না দেওয়ায় সাকিব আল হাসানকে দেশে এনে বিদায়ী টেস্ট খেলার সুযোগ দেওয়ার মিছিল নিয়ে রাস্তায় নামে তারা। এক নম্বর গেট থেকে দুই নম্বর গেটের দিকে 'লং মার্চ' কর্মসূচি পালন করতে চেয়েছিল ভক্তরা। তবে, তার আগেই মিরপুর ২ নম্বর মোড় থেকেই অপরপ্রান্তে প্রশিকা মোড় এবং আরেকদিকে ন্যাশনাল বাংলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পর্যন্ত ব্যারিকড দিয়ে চলাচল রাস্তা আটকে দেয় নিরাপত্তাবাহিনী। দুই নম্বর গেট ঘিরে রাখেন সেনাবাহিনী ও পুলিশরা।
এমন নিরাপত্তার মাঝে এক নম্বর গেটের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেদের দাবির জন্য মিছিল করে সাকিবিয়ানরা। সাকিবকে দেশের মাটিতে বিদায়ী টেস্টে খেলার সুযোগ না দিলে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের পদত্যাগেরও দাবি তোলেন তারা।আইনশৃঙ্খলাবাহিনীদের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে চলছিল তাদের কর্মসূচী।
কিন্তু, আচমকা অন্য পক্ষ আক্রমণ করলে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয় যায়। লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিলে থাকা সাকিবিয়ানদের ওপর হামলা করেন সাকিববিরোধী পক্ষ। এ সময় বেশ কয়েকজন সাকিবভক্তকে মারধর করেন তাঁরা। দুই পক্ষের হট্টগোলে কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীরাও আহত হন। আজ সন্ধ্যার আগ পর্যন্তই শেরেবাংলার প্রাঙ্গণ জুড়ে এমন উত্তপ্ত ছিল।
এই উত্তপ্ত অবস্থার মধ্যে দিয়ে বিকেল ৪টার দিকে কঠোর নিরাপত্তায় স্টেডয়াম ছেড়ে হোটেলে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা দল। যাওয়ার সময় বাসের ভেতর থেকে বাইরের চিত্রগুলো ভিডিও করতে দেখা যায় অতিথি ক্রিকেটারদের।
এই টেস্ট দিয়ে টেস্ট থেকে বিদায় বলার কথা ছিল সাকিব আল হাসানের। সেই অনুসারে দলও ঘোষণা করা হয়। প্রস্তুত হয় বিদায়ী মঞ্চ। সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশের পথে রওনা দেন সাকিব। কিন্তু দুবাই আসার পর ট্রানজিট চলাকালীন নিরাপত্তা ইস্যুতে সাকিবকে দেশে ফিরতে মানা করা হয়। এরপর থেকেই সাকিবের পক্ষে ও বিপক্ষে আন্দোলন চলছে শেরেবাংলার সামনে। একপক্ষ সাকিবকে বিদায়ী টেস্ট খেলার পক্ষে স্লোগান দিচ্ছে। আরেক পক্ষ চাইছে সাকিব যেন দেশের হয়ে খেলতে না পারেন।
আলোচিত এই সিরিজটি শুরু হবে আগামীকাল সোমবার (২১ অক্টোবর)। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে সকাল ১০ টায় মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা।