আফগান মুকুট ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা বাংলাদেশের
দুদলের সর্বশেষ সিরিজে শেষ হাসি হেসেছিল আফগানিস্তান। ঘরের মাঠে আফগানদের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। এরপর এশিয়া কাপ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপে দুদলের দেখা হলেও একদিনের ক্রিকেটে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলছে ১৬ মাস পর (জুলাই ২০২৩ সর্বশেষ)। এবার বাংলাদেশ খেলছে সফরকারী দেশ হিসেবে। আফগানদের অলিখিত হোম সংযুক্ত আরব আমিরাতে সফরকারীদের সামনে সুযোগ প্রতিশোধ নেওয়ার। তিন ম্যাচ সিরিজ এখন ১-১ সমতায়। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ সোমবার (১১ নভেম্বর) তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে। ম্যাচটি জিততে পারলে সিরিজ নিজেদের করে নেবে বাংলাদেশ। পুনরুদ্ধার করবে দুদলের দ্বিপাক্ষিক সিরিজের মুকুট, যা এখন আফগানদের দখলে।
রাওয়ালপিন্ডিতে কী ঐতিহাসিক জয়ই না পেয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও মাস দেড়েক যেতেই পাকিস্তানবধের সেই গৌরব যেন ভুলতে বসেছে বাংলাদেশ। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও। যদিও, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা। ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দেওয়া বাংলাদেশের চোখ এখন সিরিজ জয়ে। শারজায় ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায়।
প্রথম দুই ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজে এখন ১-১ সমতা বিরাজ করছে। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৯২ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিং নৈপুন্যে ৬৮ রানের জয়ে সিরিজে সমতা আনে সফরকারীরা। ফলে, তৃতীয় ওয়ানডে রূপ নিয়েছে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে।
প্রথম ওয়ানডেতে দারুণ শুরুর পর হুট করেই ক্রিকেটারদের ব্যাটিং ধস নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। যদিও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ায় শান্তরা। সিরিজ নিশ্চিত করতে হলে তৃতীয় ওয়ানডেতেও দায়িত্ব নিতে হবে ব্যাটারদের। বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির খবর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দলে সুযোগ পেয়েই ঝলক দেখিয়েছেন স্পিনার নাসুম আহমেদ।
গত বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর দলে ফিরেই ব্যাট হাতে ২৫ রান করার পর বোলিংয়ে ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে বড় অবদান রাখেন নাসুম। তার এমন প্রত্যাবর্তন বেশ আশা দেখাচ্ছে বাংলাদেশকে। তৃতীয় ম্যাচেও তাই নাসুমের কাছ থেকে সেরাটাই চাইবে দল।
দ্বিতীয় ম্যাচে হারলেও আফগানিস্তানকে খাটো করে দেখার ভুল নিশ্চয়ই করবে না বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডেতে দলটির স্পিনাররা বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপকে রীতিমত ধসিয়ে দিয়েছিল। তাই স্পিনারদের সামলানোই হবে কঠিন চ্যালেঞ্জ।
দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের পর ১৮ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় এখন ১১টি এবং হার ৭টি। গত বছরের জুলাইয়ের আফগানিস্তানের কাছে ২-১ ব্যবধানে প্রথমবারের মত ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। ওই হারের আগ পর্যন্ত দ্বিপাক্ষিক সিরিজে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত রেকর্ড ছিল বাংলাদেশের।
আফগানদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে টানা দুই দ্বিপাক্ষিক সিরিজে হার এড়ানোই বড় চ্যালেঞ্জ ফিল সিমন্স শিষ্যদের। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য একটি মাইলফলকেরও ম্যাচ। আফগানদের আজ হারালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নবম দল হিসেবে ২৫০ ম্যাচ জয়ের কীর্তি গড়বে। তিন সংস্করণ মিলে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত খেলেছে ৭৬৭ ম্যাচ। ২৪৯ ম্যাচ জয়ের বিপরীতে হেরেছে ৪৮৬ ম্যাচ। ড্র করেছে ১৮ ম্যাচ। ফল হয়নি ১৪ ম্যাচে।
এই ম্যাচে বাংলাদেশ দলের একাদশে পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম। কারণ গত ম্যাচে নাসুম-জাকির আলিরা ভালো করায়, তাদের ওপরই আস্থা রাখতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে, পরিবর্তন দেখা যেতে পারে আফগান একাদশে। দল যেমনই হোক, আফগানদের হারিয়ে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের হতাশা ভুলতে চান শান্তরা।
তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের স্কোয়াড
নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, জাকির হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি অনিক, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও নাহিদ রানা।