শঙ্কা ও সম্ভাবনার মাঝে হামজা যেন এক সেতু

ঠোঁট থেকে হাসি সরে না। ভক্ত, এলাকাবাসী, সাংবাদিক, কনটেন্ট ক্রিয়েটর, ব্রিটিশ হাইকমিশন, ক্রীড়া উপদেষ্টা, ফটোসেশন, দফায় দফায় সংবাদ সম্মেলন—পড়তে পড়তে নিশ্চয়ই হাঁপিয়ে উঠেছেন আপনি? কিন্তু, হামজা দেওয়ান চৌধুরী হাঁপাননি। ১৭ মার্চ থেকে ১৯ মার্চ, এই তিনদিনে তার ওপর দিয়ে কতটা ধকল গেছে, সেটি আর না বললেও চলে। তবু, তিনি হাসিমুখে সব মেনে নিয়েছেন।
হামজার আগমনে দেশের ফুটবলে এসেছে এক চিলতে হাসির উপলক্ষ। হামজা সেটি বুঝেছেন। বুঝেছেন বলেই সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলেছেন, প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলেন, বেড়ে ওঠা ভিন্ন সংস্কৃতিতে। বাংলাদেশের ফুটবল নয়, দেশের ক্রীড়াঙ্গনেই বর্তমানে সবচেয়ে বড় তারকা তিনি। অথচ, তার মাঝে নেই দাম্ভিকতা। এমনভাবে মিশছেন সবার সঙ্গে, যেন কতদিনের চেনা।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে আজ বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকা ছেড়েছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। হামজার সতীর্থরাও তাকে ভাসান প্রশংসায়। অনুশীলন করেছেন মাত্র এক বেলা, তাতেই মনে হয়েছে কতদিন ধরে খেলছেন। জাতীয় দলের মিডফিল্ডার সোহেল রানা বলেছেন এমন কথাই।
দেশ ছাড়ার আগে সোহেল বলেন, ‘হামজা খুব তাড়াতাড়ি আমাদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পেরেছে। মনে হচ্ছে, সে আমাদের সঙ্গে অনেকদিন ধরে খেলছে। তার সঙ্গে আমরাও যত তাড়াতাড়ি মানিয়ে নিতে পারব, টিমের জন্য ভালো হবে। হামজাকে আমরা ভারতের বিপক্ষে জয় উপহার দিতে চাই।’
এই যে হামজাকে জয় উপহার দিতে চান সতীর্থরা, হামজাও জয় এনে দিতে চান দেশকে। বাংলাদেশের এই ম্যাচটাকে চূড়ান্ত সিরিয়াসনেসের সঙ্গে দেখছে ভারত, করছে সমীহ। যার কারণে অবসর থেকে ফিরিয়ে এনেছে সুনীল ছেত্রীর মতো তারকাকে। বাংলাদেশকে নিয়ে ভাবছে তারা। সবই সম্ভব হয়েছে হামজার কল্যাণে।
ভগ্নপ্রায় দেশের ফুটবলে হঠাই আলোর রোশনাই। ফুটবল শেষ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা থেকে তৈরি হয়েছে এগিয়ে চলার সম্ভাবনা। শঙ্কা ও সম্ভাবনার মাঝে হামজা এলেন সেতু হিসেবে।