বিমানের সঙ্গে ড্রোনের সংঘর্ষ বেড়েছে

বিমান দুর্ঘটনার ইতিহাস ঘাঁটলে এ রকম বহু উদাহরণ পাওয়া যাবে, যেখানে বিমানের ইঞ্জিনের সঙ্গে উড়ন্ত পাখির সংঘর্ষে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে বা ঘটতে যাচ্ছিল। আর একেকটি বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যাও নেহাত কম নয়। আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে সেই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যখন গবেষকরা, তখনই নতুন এক সমস্যা নিয়ে হাজির হলো চালকবিহীন বিমান বা ড্রোন। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ড্রোন নিয়ে তাদের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এনবিসি নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু ২০১৪ সালেই যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে অন্তত ২৩৮ বার ড্রোনের সঙ্গে সাধারণ বিমানের প্রায় সংঘর্ষ ঘটার মতো অবস্থা হয়েছিল। চলতি বছরে সংখ্যাটা আরো বিস্ময়কর। মাত্র আগস্টেই এরই মধ্যে প্রায় ৬৫০ বার এমন ঘটনা ঘটেছে, যেখানে বিমানের কাছাকাছি বিপজ্জনকভাবে উড়েছে ড্রোন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, গেল বুধবারেই ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে সাপে কাটা একজন মানুষকে বহনকারী একটি মেডিকেল হেলিকপ্টার প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হতে যাচ্ছিল উটকো এক ড্রোনের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে।
যুক্তরাষ্ট্রের এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কর্মকর্তারা কিন্তু এই ব্যাপারটিকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। এরই মধ্যে তাঁরা ঘোষণা দিয়েছেন, যে বা যাঁরা বিমানের কাছাকাছি বিপজ্জনকভাবে ড্রোন পরিচালনা করছেন, তাঁদের জেল-জরিমানাসহ কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
এ রকম অনিয়ন্ত্রিত ড্রোন চালনা যে কত ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে, তা বোঝাতে একটি উদাহরণই যথেষ্ট, ক্যালিফোর্নিয়ার একটি রাস্তায় আচমকা ড্রোন আছড়ে পড়লে ২০টি যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় চারটি বাড়ি। কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় দোষীদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ৭৫ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
উন্নত দেশগুলোতে পশু পালনসহ নেহাত শখের বশেই অনেকে ড্রোন উড়িয়ে থাকেন। তবে একের পর এক ড্রোন-সংক্রান্ত দুর্ঘটনার ফলে দেশগুলো এখন এ ব্যাপারে সচেতন হচ্ছে। তবে সমস্যা হলো, দেশগুলোর আইনে এখনো এ জাতীয় ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ আনা হবে, তা ঠিক করে বলা হয়নি। ফলে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে।