ঈদের ছুটিতে
মেট্রোতে দিল্লি দেখা
ইতিহাসের হাজার ঐতিহ্য নিয়ে সেই সময়ের দিল্লি থেকে এখন নয়াদিল্লি। তাই ভ্রমণ পিপাসুদের আগ্রহের স্থান এটি। হিন্দু রাজপুত শাসক থেকে শুরু করে মুঘল আমল, এরপর ব্রিটিশ শাসন। সব মিলিয়ে সাতটি শহরের উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে আজকের আধুনিক শহর দিল্লি। এ শহরেই আপনি একসাথে পেয়ে যাবেন হাজার বছরের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা স্মৃতিস্তম্ভ কুতুব মীনার, আধুনিকতার বাহন মেট্রোরেল, মোঘলদের ঐতিহ্য ধারণ করা বাজার থেকে মেগামল, আদী প্রার্থণাকেন্দ্র, জামা মসজিদ থেকে শুরু করে আধুনিকতার কোমল স্পর্শে নির্মিত লোটাস টেম্পল। আছে হুমায়ুন সমাধিসৌধ, লাল কেল্লা, পুরনো কেল্লা। ঘুরে দেখতে পারেন রাষ্ট্রপতি ভবন এবং ইন্ডিয়া গেট।
মেট্রোতে দিল্লি ভ্রমণ
পৃথিবীর আধুনিক শহরগুলোতে এখন জনপ্রিয় বাহনের নাম মেট্রোরেল। আরামদায়ক, দ্রুততম বাহন এই মেট্রোরেল। বিদ্যুতের গতিতে ছুটে চলা মেট্রো এখন দিল্লিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় যাতায়াত মাধ্যম। কোথাও পাতালপথ আবার কোথাও শহরের উপর দিয়ে। বিমানবন্দর কি রেলস্টেশন সব জায়গা থেকেই হাতের কাছে রয়েছে মেট্রো স্টেশন। স্টেশনে গিয়ে নির্ধারিত কাউন্টার থেকে নিয়ে নিন নির্ধারিত দূরত্বের রির্চাজেবল কয়েন। কয়েন প্রবেশদ্বারে ধরলেই খুলে যাবে সেই দরজা যেখানে মেট্রো এসে থামে। প্রবেশ করুন আর কয়েন নিজের কাছে সংরক্ষণ করুন। কারণ আপনার গন্তব্যে পৌঁছানোর পর এই কয়েন নির্ধারিতে স্থানে ফেলেই খুলতে হবে বের হওয়ার দরজা। মনে রাখবেন নির্ধারিত রিচার্জের বেশি রাস্তা ভ্রমণ করলেই আপনাকে গুণতে হবে জরিমানা। প্রতি মিনিটেই পর পর আসছে মেট্রো , একটিতে উঠতে না পারলে মন খারাপের কিছু নেই। পরের মেট্রোতে চড়ে অনায়াশে ঘুরে দেখুন দিল্লি শহরের সব ইতিহাস, ঐতিহ্য আর আধুনিকতা। এটাও মনে রাখবেন একমাত্র মেট্রোতে চড়েই আপনি সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে ঘুরে দেখতে পারেন কুতুব মীনার, লোটাস টেম্পল, লাল কেল্লা, পুরোনো কেল্লা, জামা মসজিদসহ দিল্লির অন্যান্য দর্শনীয় জায়গাগুলো।
ঢাকা থেকে দিল্লি
সড়ক পথ, রেলপথ বা আকাশপথ যেকোনো মাধ্যমেই খুব সহজে পৌঁছে যেতে পারেন ঢাকা থেকে নয়াদিল্লি। সড়ক পথে যেতে ঢাকার কল্যাণপুর থেকে কেটে নিন বাসের টিকেট। কলকাতা পৌঁছে কেটে নিন সবচেয়ে দ্রুতগামী ট্রেন রাজধানী এক্সপ্রেসের টিকিট, যা আপনাকে নামিয়ে দেবে নিউ দিল্লি রেলস্টেশনে। চাইলে অন্যান্য ট্রেনের টিকেটও কাটতে পারেন, যার মধ্যে রয়েছে ইউভা এক্সপ্রেস যেটি আপনাকে নিয়ে যাবে আনন বিহার রেলস্টেশন দিল্লি, কালকা মেল আপনাকে নামিয়ে দিবে পুরাতন দিল্লি রেলস্টেশনে। এ ছাড়া আরো অনেক ট্রেন রয়েছে যা কলকাতা থেকে দিল্লি পর্যন্ত যাতায়াত করে। আর যারা আকাশপথে যেতে চান তারা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি চলে যান ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
কখন দিল্লি ভ্রমণে যাবেন
নভেম্বর থেকে এপ্রিল, দিল্লির আবহাওয়া থাকে ভ্রমণেচ্ছুদের মনের মতো। এই সময় দিল্লির তাপমাত্রাও গা সহনীয় এবং ঘুরে বেড়ানোর একদম উপযোগী। গরমকালে দিল্লির তাপমাত্রা থাকে ৪৫ ডিগ্রির উপরে। তাই দিল্লি বেড়াতে গেলে গরমের সময়টা না বেছে নেওয়াই ভালো। তার ওপর যখন তখন বৃষ্টির ঝামেলা তো থেকেই যাচ্ছে।
দিল্লি তে যা দেখবেন
• রেড ফোর্ট (লালকেল্লা)
• পুরোনো কেল্লা (ওল্ড ফোর্ট)
• কুতুব মিনার
• জামা মসজিদ
• ইন্ডিয়া গেট
• হুমায়ুনের সমাধিসৌধ
• বাহাই মন্দির (লোটাস টেম্পল)
• ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল সেন্টার
• রাষ্ট্রপতি ভবন
• গুরুদুয়ারা বাংলা সাহেব
• রাজঘাট
• যন্তর মন্তর
• লোধি গার্ডেন
• সফদরজঙ্গ সমাধিসৌধ
• অক্ষরধাম মন্দির
• দিল্লি হাট
• দ্য ন্যাশনাল জুওলোজিক্যাল পার্ক
• নিজামুদ্দিন দরগাহ
• কালকা জি মন্দির
• ন্যাশনাল সায়েন্স সেন্টার
• দিগম্বর জৈন মন্দির
• ন্যাশনাল রেল মিউজিয়াম, ইত্যাদি।
যা করবেন, যা করবেন না
• বাংলাদেশ থেকে গিয়ে আরেক দেশের রীতি নীতি আপনাকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে। তাই যেখানেই ভ্রমণ করবেন সে সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। এমন কিছু করবেন না যেটা আপনাকে আইনি জটিলতায় ফেলে।
• পাসপোর্ট সঙ্গে রাখবেন, কারণ কোনো কোনো দর্শনীয় স্থানে প্রবেশের ক্ষেত্রে আপনাকে আইডি হিসেবে তা প্রদর্শন করতে হতে পারে।
• ভ্রমণে যাদের থেকে আপনাকে সহায়তা নিতে হবে তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে ভ্রমণ গাইড সঙ্গে নিন।
• শরীর সুস্থ রাখতে প্রয়োজনীয় খাবার ও পনি পানে অনিয়ম করবেন না।