হাউস বোটে ভেসে টাঙ্গুয়ার হাওরের সৌন্দর্য্য উপভোগ
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/01/09/house_boat.jpg)
টাঙ্গুয়ার হাওর, দূরের মেঘালয় পাহাড়, মেঘ আর নদীর মিলন যেন জীবন্ত ক্যানভাস। তাই যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি দূর করতে আপনি প্রিয়জনকে নিয়ে চলে যেতে পারেন সুনামগঞ্জে। যাদুকাটা নদীর স্বচ্ছ জলে ভেসে বেড়াতে বেড়াতে আপনি পরিপূর্ণ তৃপ্তি পেতে পারেন। টাঙ্গুয়ার হাওরের স্বচ্ছ পানি আপনাকে একদিকে যেমন স্বাগত জানাবে, অপরদিকে পাহাড় আর মেঘ-বৃষ্টি আপনাকে আহ্বান জানাবে অবগাহনের। আর এ সবকিছুর উপভোগে বাড়তি মাত্রা যোগ করবে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ‘হাউস বোট’। দেশের সুন্দর পর্যটন জেলাগুলোর মধ্যে সুনামগঞ্জ অন্যতম।
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/01/09/shaheed_siraj_lake.jpg)
ইতোমধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে হাউস বোট। কারণ এসব বোটে রয়েছে সারাদিন জলে ভেসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি রাত যাপনেরও সুযোগ। আগে নৌকায় করে লেকে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ থাকলেও রাত যাপনের সুযোগ ছিল না। টাঙ্গুয়ার হাওরের ভেসে বেড়ানোর বেশ কিছু হাউস বোট রয়েছে। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত এসব বোটের বিলাসবহুল কক্ষে শুয়ে জানালা দিয়ে উপভোগ করা যায় দিগন্ত বিস্তৃত টাঙ্গুয়ার হাওরের সৌন্দর্য। ছাদে রয়েছে আড্ডা দেওয়ার জন্য বাঁশের তৈরি সোফা।
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2024/01/09/nature_and_you.jpg)
পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী আছে নদী থেকে ধরা মাছের নানা রেসিপি। বিশালাকার হাউজ বোটের গঠন ও আকার দেখে প্রথমে মনে হতে পারে ভারতের কেরালার আলেপ্পি হ্রদে ঘুরছে যানটি। আদতে এই বোট টাঙ্গুয়ার হাওরের পর্যটক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2024/01/09/food.jpg)
টাঙ্গুয়ার হাওরে যেখানে জলের রঙ কখনো আকাশের মতো নীল, কখনো আয়নার মতো স্বচ্ছ টলটল, এমন স্নিগ্ধ রঙে রাঙা পানিতে টইটুম্বুর। এই হাওরে মেঘালয় রাজ্যের পাহাড় থেকে নেমে আসে ঝরনার আসা স্বচ্ছ পানি। মেঘালয়ের পাহাড়কে মনে হয় যেন হাওরের সীমানা প্রাচীর।
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2024/01/09/shaheed_siraj_lake.jpg)
টাঙ্গুয়ার হাওরকে ২০০০ সালে সুন্দরবনের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় ‘রামসার সাইট’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। মূলত এরপর থেকেই প্রচারণায় আসতে থাকে এই হাওরের সৌন্দর্য্য। শীতের কোনো এক সকালে আপনিও সিলেটের সুনামগঞ্জ শহরে যেতে পারেন। এরপর শহর থেকে সরাসরি ঘাটে। সেখান থেকে বোটে করে চলে যাবেন হাওরের। সেখানে ওয়াচ টাওয়ার থেকে উপভোগ করা যাবে হাওরের সৌন্দর্য্য।
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2024/01/09/night_from_house_boat.jpg)
এরপর পরবর্তী গন্তব্য হিসেবে টেকের ঘাট যেতে পারেন। সেখানে পৌঁছে প্রথমে ইজি বাইক নিয়ে চলে যাবেন লাকমাছড়া। লাকমাছড়া থেকে শহীদ সিরাজি লেকে (নীলাদ্রি লেক) যেতে পারেন। এ ছাড়া নদীর পাড়ে মানুষের জীবন ধারা উপভোগ করতে যাদুকাটা নদীর তীরেও যেতে পারেন। এরপর বন দর্শনে গিয়ে সেখানে ঘোড়ায় চড়ে ঘুরে বেড়ানো যেতে পারে।
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2024/01/09/sky-barikkar_tila.jpg)
এরপর পরবর্তী গন্তব্য হিসেবে বারিক্কা টিলার ওপরে উঠতে পারেন। টিলার ওপর থেকে মেঘালয়ের অপরূপ সোন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবেন। সবুজে মোড়া উঁচু বারেক টিলার (যা বারিক্কা টিলা, বারেকের টিলা নামেও পরিচিত) একপাশে পাহাড়, অন্যপাশে স্বচ্ছ জলের নদী। টিলার ওপর দাঁড়ালে হাতছানি দেয় মেঘ। এটির অবস্থান সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়দল উত্তর ইউনিয়নের লাউড়ের গড় এলাকায় ভারত সীমান্ত ঘেঁষে।
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2024/01/09/barikkar_tila.jpg)
ভারতের পাহাড়ে রয়েছে একটি তীর্থস্থান ও মাজার। বছরের নির্দিষ্ট দিনে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের হাজার হাজার লোক জড় হয় পূণ্যস্নান ও উরসে। তখন ২-১ দিনের জন্য সীমান্ত খোলে দেওয়া হয়। এই বারেকটিলাতে আছে ৪০টির মতো আদিবাসী পরিবার। এই এলাকায় ৩৬৫ একর জায়গা জুড়ে আছে রং-বেরঙের নানা প্রজাতির গাছপালা।
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2024/01/09/bangladesh_area.jpg)
কীভাবে যাবেন?
টাঙ্গুয়ার হাওর মূলত দুই ভাবে যাওয়া যায়। একটি নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ হয়ে, আরেকটি সুনামগঞ্জ জেলা হয়ে। ঢাকা থেকে এনা ও শ্যামলী পরিবহণের বাস দিয়ে সরাসরি সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন। আর সুনামগঞ্জ পৌঁছাতে প্রায় ৬ ঘণ্টা সময় লাগে।
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2024/01/09/room.jpg)
যদি সিলেট থেকে সুনামগঞ্জ যেতে চান তাহলে সিলেটের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড থেকে সুনামগঞ্জ যাবার লোকাল ও সিটিং বাস আছে। সুনামগঞ্জ যেতে দুই ঘণ্টার মতো সময় লাগবে। সুনামগঞ্জ শহরের একদম কেন্দ্রে সাহেব বাড়ি ঘাট হতেই ছাড়ে মূলত হাউজ বোটগুলো। আর যদি মোহনগঞ্জ হতে যেতে চান তাহলে আসতে হবে ট্রেনে। মোহনগঞ্জ দিয়ে তুলনামূলক কম খরচে ঘুরে আসা যায় টাঙ্গুয়ার হাওর। মোহনগঞ্জ দিয়ে যেতে চাইলে ট্রেনে বা বাসে মোহনগঞ্জ এসে সেখান হতে সিএনজি বা লেগুনায় মধ্যনগর ঘাট। আর সেখান হতেই যেতে পারবেন টাঙ্গুয়ার হাওরে।
হাউজ বোটগুলোর ভাড়া
হাউজ বোটগুলোর ভাড়া জনপ্রতি পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত (সুনামগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জ)। তবে আপনি ইচ্ছা করলে প্যাকেজ নিতে পারেন। যা আপনাকে আলোচনা করে নিতে হবে।