জমি, ব্যাংকের কাগজ নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যবহার করা যাবে না : গুয়াহাটি হাইকোর্ট
জমির রাজস্ব প্রদানের রসিদ, ব্যাংকের স্টেটমেন্ট কিংবা প্যান কার্ড — কোনোটাই ভারতের নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। আজ মঙ্গলবার গুয়াহাটি হাইকোর্ট এ কথা জানিয়েছেন।
এদিন ‘বিদেশি’ ক্যাটিগরিতে থাকা এক নারীর আবেদনকে খারিজ করে এ কথা জানান আদালত। যদিও আসামে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি তৈরির সময় নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে জমি ও ব্যাংকের কাগজপত্রের নথি গ্রহণ করা হয়েছিল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অন্তত ১৯ লাখ মানুষ নিজেকে নাগরিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছেন। গত আগস্টে প্রকাশিত তালিকায় তাঁদের নাম বাদ পড়েছে। একাধিক ট্রাইবুন্যালে চলছে শুনানি। তবে ট্রাইবুন্যালে প্রত্যাখ্যাত হলেও সুযোগ থাকছে হাইকোর্ট, এমনকী সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ারও।
সরকার জানিয়েছে, সমস্ত আইনি সুযোগ না নেওয়া পর্যন্ত কাউকে ডিটেনশন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে না।
সাম্প্রতিক নির্দেশে গুয়াহাটি হাইকোর্টের দুই বিচারপতি মনোজিৎ ভুঁইয়া ও পার্থজ্যোতি সাইকিয়া ২০১৬ সালের এক বিচারকালীন রায়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘সেবার আদালত প্যান ও ব্যাংকের নথিকে নাকচ করে দিয়েছিলেন নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে।’
পাশাপাশি আদালত জানান, জমির রাজস্ব দানের রসিদ কোনো ব্যক্তির নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যবহার করা যাবে না।
জাবেদা বেগম ওরফে জাবেদা খাতুন হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেন তাঁকে ট্রাইব্যুনালে ‘বিদেশি' ঘোষণা করার পর। তিনি হাইকোর্টে যে ১৪টি কাগজ জমা দেন, তারমধ্যে অন্যতম ছিল তাঁদের গ্রামের প্রধানের লেখা শংসাপত্র, যেখানে ওই নারীর বাবাকে ও স্বামীকে ওই গ্রামের বাসিন্দা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু ট্রাইব্যুনালের মতোই হাইকোর্টেরও বক্তব্য, তিনি তাঁর বাবা-মার কোনো নথি দিতে সক্ষম হননি।
হাইকোর্ট জানিয়েছেন, ‘আদালত এরইমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, প্যান কার্ড ও ব্যাংকের নথি নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। জমির রাজস্ব দানের রসিদও কোনো ব্যক্তির নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। সুতরাং ট্রাইব্যুনালে যেভাবে প্রমাণপত্র সম্পর্কে রায় দেওয়া হয়েছে, আমাদের মতে তা সঠিক।’