‘পরবর্তী মার্কিন প্রশাসন ইরানের কাছে নতিস্বীকার করবে’
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রশাসন ইরানের শক্তি-সামর্থের কাছে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হবে। রুহানি গতকাল মঙ্গলবার রাতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে পূর্বে ধারণ করা ভাষণে এ মন্তব্য করেন। ইউএন নিউজ এ খবর জানিয়েছে।
হাসান রুহানি বলেন, ‘আমরা মার্কিন নির্বাচন ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ব্যবহার করার মতো কোনো বিষয় নই। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক, তারা ইরানের শক্তির সামনে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হবে।’
বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালের মে মাসে ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে বের করে নেন। ট্রাম্প তাঁর ভাষায় নতুন একটি চুক্তি করার জন্য ইরানের প্রতি আহ্বান জানালেও তেহরান তা প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যদিকে আগামী ৩ নভেম্বরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন নির্বাচিত হলে ইরানের পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ২০১৫ সালে যখন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনামলে এই সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়, তখন জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
প্রেসিডেন্ট রুহানি জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে মার্কিন শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে একজন কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের নির্মম হত্যাকাণ্ডকে ইরান পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করেন।
রুহানি বলেন, ‘একজন প্রতিবাদীর সঙ্গে মার্কিন পুলিশের নৃশংস আচরণের যে চিত্র বিশ্বব্যাপী প্রচার হয়েছে, তা আমাদের কাছে ছিল চিরচেনা একটি দৃশ্য। ওই কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির গলায় যে পা রাখা হয়েছিল, সেটি আমাদের অতি পরিচিত। কারণ, এটি সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পা, যা প্রতিটি স্বাধীনতাকামী জাতির টুঁটি চেপে ধরে আছে।’
হাসান রুহানি আরো বলেন, ‘ইরান কয়েক দশক ধরে তার স্বাধীনচেতা মনোভাব ও সাম্রাজ্যবাদের তাবেদারি থেকে মুক্ত থাকার জন্য এ ধরনের মূল্য পরিশোধ করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তেহরান দাম্ভিক শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে নিজের উন্নতির ধারা অব্যাহত রেখেছে।’
ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানি জনগণের কষ্ট হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু স্বাধীনতাবিহীন ও তাবেদারি জীবন এর চেয়ে কষ্টকর।’ কাজেই ইরান চূড়ান্ত চাপের মুখে নতিস্বীকার করবে না বলেও রুহানি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এ ছাড়া ইরানি প্রেসিডেন্ট রুহানি তাঁর ভাষণে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় ইরান বড় ভূমিকা রাখছে বলেও মন্তব্য করেন।